Site icon E Purba Bardhaman

জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা না মেটানোয় পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসককে জেলে পোরার নির্দেশ

Judge ordered to keep Purba Bardhaman's district magistrate in jail for not paying the compensation

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গোদায় স্যাটেলাইট টাউনশিপের জন্য অধিগৃহীত জমির দাম মালিককে না মেটানোয় বর্ধমানের জেলা শাসককে সিভিল জেলে পোরার নির্দেশ দিলেন বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শেখ মহম্মদ রেজা। আগামী সোমবার জেলা শাসককে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেদিনই তাঁকে বর্ধমান সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। হাজির না হলে জেলা শাসকের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নির্দেশে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারক। ১ মাস জেল খাটতে হবে জেলাশাসককে। ১ মাস জেলাশাসককে জেল খাটানোর জন্য জমির মালিককে অস্তিত্ব ভাতা বাবদ ১ হাজার ৮৫০ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বৃহস্পতিবার জমির মালিক ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সেই টাকা জমা করেছেন। জেলা শাসককে জেলে পোরার নির্দেশে আদালত চত্বরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে এ ধরণের নির্দেশ জেলা আদালতে হয়নি বলে মত আইনজীবীদের। প্রবীণ আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ৫০ বছরের কাছাকাছি প্র্যাকটিস করছি। জেলা শাসককে জেলে পোরার নির্দেশ এর আগে কোনও বিচারক দিয়েছেন বলে জানা নেই। টাকা না মেটানোয় জেলা শাসকের বাংলো এবং অন্যান্য সরকারি সম্পত্তি নিলামের বহু নজির রয়েছে। কিন্তু, এ ধরণের নজির সম্ভবত রাজ্যের কোথাও নেই। জেলা শাসককে জেলে পোরার নির্দেশে প্রশাসনিক মহলেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জমির মালিকের আইনজীবী রাজকুমার গুপ্ত বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ না আনতে পারলে জেলা শাসককে জেলে যেতে হবে। এটাই আইনের বিধান। এর আগে জেলা শাসকের বাংলো নিলামে চড়ানো হয়েছে। এই মামলায় মিথ্যা হলফনামা দেওয়ার জন্য সহকারী ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সরকার নানা অছিলায় জমির মালিককে টাকা দিচ্ছে না। এছাড়াও এই মামলায় বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থাকে ৫০ হাজার এবং সরকারকে ১০ হাজার টাকা কস্ট করেছেন বিচারক। সেই টাকা জমির মালিক পাবেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫-০৬ সালে বর্ধমানের গোদায় স্যাটেলাইট টাউনশিপ গড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। গোদার বাসিন্দা আব্দুল রহিম, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল আলিমের ১ একর ৭৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। শতকপিছু ৫হাজার ৮৮৬ টাকা দাম নির্ধারণ করে সরকার। তাতে আপত্তি জানিয়ে বর্ধিত দাম পেতে আদালতে মামলা করেন জমির মালিকরা। আদালত শতকপিছু ৩৫ হাজার টাকা দাম দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী, জমির মালিকদের পাওনা হয় ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। এছাড়াও টাকা না মেটানো পর্যন্ত বার্ষিক ১৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে বলে আদালত। ২০১২ সালে দাম মেটানোর জন্য নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু, এখনও সরকার সেই দাম মেটায় নি। বর্তমানে জমির মালিকদের সরকারের কাছে পাওনা হয়েছে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। আদালত এ ধরণের নির্দেশ দিলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আদালতে মিথ্যা হলফনামা দেওয়ায় পূর্ব বর্ধমানের সহকারী ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর নির্দেশ
Exit mobile version