E Purba Bardhaman

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে ভোগান্তির মুখে রোগীরা

Junior doctors of Burdwan Medical College & Hospital during a demonstration protesting against the attack on junior doctors at NRS Hospital. Junior doctors are not working. Patient admission has been stopped

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- অনেক আশা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন চিকিত্সা করাতে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে চরম আতংক গ্রাস করল রোগীদের। মঙ্গলবার সকাল থেকেই চলছিল বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের গেট বন্ধ করে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বন্ধ হয়ে রোগী ভর্তি। অন্যদিকেভেতরে আটকে পড়েন রোগী সহ রোগীপক্ষের লোকজন। তাঁদের বাইরে আসতেও দেওয়া হয়নি। ফলে অনেকেই খাবার না পেয়েজল না পেয়ে অসুস্থ হতে শুরু করেন। এদিকেমঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ে বুধবার। বুধবার সকাল থেকে শুরু জরুরী বিভাগের গেট বন্ধই নয়হাসপাতাল ঢোকার সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তার জেরেই ভয়াবহ ভোগান্তির মুখে পড়লেন রোগীরা। পথ দুর্ঘটনায় জখম সেখ সাহাদাতকে নিয়ে খণ্ডঘোষ থেকে এসেছিলেন তাঁর দিদি নয়নতারা বিবি। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে চিকিৎসা ঠিকমত না হওয়ায় এদিন তাঁকে ছুটি করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পাওয়া রোগী দেওয়ানদিঘীর বাসিন্দা লক্ষ্মণ হেমব্রমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলেও তাঁকেও এদিন ছুটি করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাতে কাতরাতে মুর্শিদাবাদের কাঁদি থেকে বর্ধমান হাসপাতালে এসেছিলেন আদুরি বিবি। দ্রুত প্রসবের প্রয়োজন ছিল তাঁর। কিন্তু এদিন তাঁকেও ঢুকতেই দেওয়া হয়নি হাসপাতালে। পা ভেঙ্গে যাওয়ায় ১৬দিন আগে পায়ের অপারেশন করিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সালারের বাসিন্দা বৃদ্ধ শুকতার সেখ। বুধবার তাঁকে হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনিও ঢুকতে পারলেন না। পায়ে ট্রাকশান নিয়েই তাঁকে ফিরে যেতে হল বাড়ি। মাত্র ৪ বছরের শিশু রুমি খাতুন পায়খানা জ্বর উপসর্গ নিয়ে প্রথমে বোলপুরের সিয়ান হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে চিকিরসা না হওয়ায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শিশুকে কোলে নিয়ে বাবার আকুতিও মন গলাতে পারেনি জুনিয়র ডাক্তারদের। ফিরে যেতে হল তাকেও। একইভাবে বুধবার পেটে যন্ত্রণা নিয়ে নারায়ণগড় থেকে এসেও ফিরে যান মনু টুডু। কিডনির সমস্যা নিয়ে এসেও ফিরে যান মন্তেশ্বরের ইজাবুল মণ্ডল। কার্যত বুধবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দিনভরই চলল এই চিত্র। শুধু এটাই নয়এরই পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি থাকা একাধিক রোগীকেও এদিন ছুটি দেওয়া হয়। রোগীপক্ষের লোকজন জানিয়েছেনযেভাবে হাসপাতাল জুড়ে তাণ্ডব হয়েছে তাতে আর ভরসা করতে পারেননি তাঁরা। বাধ্য হয়েই তাঁরা রোগীকে নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপাস্পেশালিটি বিভাগ অনাময় হাসপাতালেও এদিন একই চিত্র দেখতে পাওয়া গেছে। বুকের সমস্যা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরামর্শ অনুযায়ী অনাময় হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে এসেছিলেন পাল্লা রোডের বাসিন্দা বাপন সমাদ্দার। কিন্তু এদিন তাঁর চিকিৎসা হয়নি। বেসরকারী চিকিৎসা পরিষেবাও এদিন স্বাভাবিক ছিল না। বর্ধমানের ডাক্তার পাড়া হিসাবে পরিচিত খোষবাগান এলাকার অধিকাংশ চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিষেবাই এদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল।

Exit mobile version