বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির মধ্যেই মৃত্যু হল কালনার সেই নির্যাতিতা ছাত্রীর। টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর বুধবার রাতে মারা যায় সে। সে স্থানীয় স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। মৃতার এক মেসোমশাই বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে ২ দিন ধরে নির্যাতিতার কোনও চিকিৎসাই হয়নি। ২ দিন আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। ছাত্রীকে ভালো চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। প্রশাসন ওর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিল। পরে তা এড়িয়ে যায়। নিউরোর চিকিৎসা যে এখানে হয়না তা আগে আমাদের জানানো হয়নি। জানালে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম। অনেক আগেই রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতাম। অবস্থা একেবারে আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছাত্রীকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। পুলিসের অনুমান, ঘটনায় সিরিয়াল চেন কিলার কামরুজ্জামান সরকার জড়িত। যদিও সিরিয়াল কিলার এই ঘটনায় জড়িত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে পরিবারের। পরিবারের এক সদস্য বলেন, অন্যান্য ঘটনার সঙ্গে এই ঘটনার বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা বলেন, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না। খুব খারাপ অবস্থায় মেয়েটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। আনার পরই তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সেখানেই সে মারা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ মে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার দিন বিকালে অন্যান্য দিনের মতো পরিচারিকার কাজে বেরিয়ে যান ছাত্রীর মা। স্কুল ছুটি থাকায় ওই ছাত্রী বাড়িতে একাই ছিল। কাজ সেরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বিছানায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন ছাত্রীর মা। ছাত্রীর শরীরে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ছাত্রীর মায়ের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িতে আসেন। তড়িঘড়ি তাকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে বর্ধমানে আনা হয়।