Site icon E Purba Bardhaman

জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে ধ্বংসের মুখে বর্ধমানের ল্যাংচা বাজার

শক্তিগড় (পূর্ব বর্ধমান) :- ২নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জেরে ইতিহাস প্রসিদ্ধ বর্ধমানের বিখ্যাত ল্যাংচা ব্যবসা ধ্বংসের মুখে। মঙ্গলবার শক্তিগড়ে ল্যাংচা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের বৈঠকের পর এই আতংকই চোখে মুখে ফুটে উঠেছে শক্তিগড়ের ল্যাংচা ব্যবসায়ীদের। ল্যাংচা মানেই যেখানে বর্ধমানের এই শক্তিগড়ের নাম জ্বলজ্বল করে ওঠে, সেই শক্তিগড়ের ল্যাংচা ব্যবসাই এবার প্রশ্ন চিহ্নের মুখে এসে দাঁড়ালো। ২নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জেরে ব্যবসাদারদের সরে যেতে হবে বর্তমান ব্যবসাকেন্দ্র থেকে। কিন্তু বিকল্প কোনো জায়গাও তাঁদের হাতে নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের ফলে বাস্তবিকই বিপন্নের মুখে বর্ধমানের বিখ্যাত ল্যাংচা। এদিন বৈঠকের পর শক্তিগড় ল্যাংচা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি রাধাকৃষ্ণ পরামাণিক জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠক সম্পর্কে তাঁরা তাঁদের আপত্তি জানিয়েছেন। কারণ শক্তিগড়ে কেবলমাত্র ৩৮টি ল্যাংচার দোকানই নেই। তার সঙ্গে ছোটবড় কারখানা সহ অন্যান্য দোকানও রয়েছে। কিন্তু সেই সমস্ত ব্যবসায়ীদের এদিনের বৈঠকে ডাকা হয়নি। কার্যত রাস্তা সম্প্রসারণের জেরে তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে প্রশাসনের আধিকারিরকরা তাঁদের সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন মাত্র। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ল্যাংচা ব্যবসায়ীরা যে যে জায়গায় রয়েছেন সেই জায়গার পিছনের জায়গা তাঁরা কিনে নিন এই সময়কালের মধ্যে। রাধাবাবু জানিয়েছেন, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নেতিবাচক। কারণ রাস্তা সম্প্রসারণের এই খবরে পিছনের জায়গার মালিকরা কার্যতই চলে আসবেন প্রথম সারিতে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা তাঁদের জায়গার দাম হাঁকবেন। এমতবস্থায় তাঁরা কোনোভাবেই পিছনের জায়গা পাবেন না। ফলে কার্যত বর্তমান যে ল্যাংচার বাজার তা ধ্বংস হতে চলেছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী কৌশিক ঘোষ জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জেরে শক্তিগড়ের বাজার প্রথম দফায় নিদারুণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরপর ফের আবার তাঁদের উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি কেন বারবার এই আঘাত হানছেন ? কেন তাঁরা তাঁদের প্রয়োজনমত জায়গা একবারেই অধিগ্রহণ করছেন না। বারবার এই আঘাতের ফলে ল্যাংচা ব্যবসা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁরা জানিয়েছেন, এন এইচ ২ – র এই সম্প্রসারণের ফলে পথে বড় বসবেন কয়েক হাজার মানুষ। কারণ এই ল্যাংচা শিল্পের সংগে যুক্ত রয়েছেন হকার, ফেরিওয়ালারাও। ব্যবসা বন্ধ হলে কার্যত তারাও বেকার হয়ে যাবেন। এব্যাপারে ২১ জুলাইয়ের সভার পরই শক্তিগড়ের এই ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থও হতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) প্রণব কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে ব্যবসায়ীদের গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কি সুবিধা সুযোগ দেওয়া যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

Exit mobile version