বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রয়াত বিশিষ্ট রবীন্দ্রগবেষক মানস বসু। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় বর্ধমানের ছোটনীলপুরের নিজের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। তাঁরা বুঝতে পারেননি। এরপরই মঙ্গলবার তাঁরা লক্ষ্য করেন মানস বসুর ফ্ল্যাট থেকেই এই দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এরপর পুলিশে খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান কয়েকদিন আগেই তিনি মারা গেছেন। ফ্ল্যাটের বাথরুমের সামনেই তিনি পড়েছিলেন। তার থেকে অনুমান হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে সম্ভবত তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। অবিবাহিত মানস বসু ‘ঠাকুর পরিবার’ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছিলেন। তাঁর গবেষণালব্ধ বই “জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির জীবনধারা ও গান “প্রকাশিতও হয়েছে। সম্প্রতি আরও একটি বই প্রকাশের পথে ছিল। সম্প্রতি বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে জীবনের শেষ সম্বর্ধনা নেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের উদ্যোগে আয়োজিত সঙ্গীত মেলা থেকে। বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদরের খণ্ডঘোষ থানার শাঁখারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মানস বসু। বাবা অম্বুজা ভূষণ বসু ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কোনো সাংগীতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ না করলেও মানস বসুর দাদা মণিমোহন বসুর আগ্রহে গিটার বাজানো শুরু করেন। এরপর কর্মসূত্রে তিনি চলে আসেন বর্ধমানের বড়বাজার এলাকায়। সেখানেই থাকতেন। কয়েকবছর আগে সেখানকার বাড়ি বিক্রি করেন চলে আসেন ছোটনীলপুরের ফ্ল্যাটে। মানস বসুর প্রিয় ছাত্র মানব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বুধবার বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধু রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসাবেই নয়, মানস বসুর ঠাকুরবাড়ি নিয়ে তাঁর গবেষণা বহু ছাত্রছাত্রীকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বর্ধমানে।