E Purba Bardhaman

পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে বুদবুদ থানাকে আনার দাবীতে শুরু হল আইনজীবীদের কর্মবিরতি

The lawyers' strike was started in the demand of bringing Budbud police station under Purba Bardhaman District Court

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বুদবুদ থানাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে আনার দাবীতে আইনজীবীদের ৭ দিনের কর্মবিরতি বুধবার থেকে শুরু হল। কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি এদিন আইনজীবীরা আদালত চত্বরে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন আইনজীবীরা। বেশিরভাগ বক্তাই দাবি আদায়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার পক্ষে মত দেন। আইনজীবীদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন আদালতের ল’ক্লার্করাও। পশ্চিমবঙ্গ ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান ইউনিট দাবির সমর্থনে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি বেলবন্ড না দেওয়া এবং জামিন পাওয়া অভিযুক্তদের শনাক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে জামিন পেলেও জেল থেকে ছাড়া পেতে সমস্যা হবে ধৃতদের। এদিন বেশ কয়েকজন জামিন পায়। কিন্তু, বেলবন্ড জমা না পড়ায় তারা ছাড়া পায়নি। আইনজীবী ও ল’ক্লার্কদের কর্মবিরতির জেরে ভোগান্তিতে পড়ে বিচারপ্রার্থীরা। বহু মামলার শুনানি হয়নি। মাদক আদালতে ২৩টি, চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে ১৮টি, প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে ২৩টি, দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে ২৯টি মামলার শুনানি হয়নি। জেলা বিচারকের এজলাসে ১৬টি আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি নির্ধারিত থাকলেও তা হয়নি। সিজেএম আদালতে অন্যান্য দিন গড়ে ১০টি করে মামলা রুজু হয়। আইনজীবীদের কর্মবিরতির কারণে তা হয়নি। একইভাবে অন্যান্য ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে একটি মামলারও শুনানি হয়নি এদিন। এমনিতেই জেলা আদালতে মামলার পাহাড় জমে রয়েছে। ৭ দিনের কর্মবিরতিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টমহল। এদিকে, বর্ধমান আদালতের আইনজীবীদের দাবিকে সমর্থন করেছে কালনা বার অ্যাসোসিয়েশন। এদিন কালনা বার অ্যাসোসিয়েশন সভা ডেকে বর্ধমানের আইনজীবীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন। দাবির সমর্থনে সোমবার কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কালনার আইনজীবীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, দাবির কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কোনও দিক থেকেই উত্তর মেলেনি। বর্ধমান আদালতকে বঞ্চনার প্রতিবাদে এই আন্দোলন। এতে বিচারপ্রার্থীদের কিছুটা সমস্যা হতে পারে। কিন্তু, বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে বিচারপ্রার্থীরা এটুকুমানিয়ে নেবেন বলে আশা করি।
এ বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালত গঠিত হয়েছে। পৃথক জেলা আদালত গঠন হওয়ার পরই বুদবুদ কোন আদালতের অধীনে থাকবে তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের দুই সহ সম্পাদক পার্থ হাটি ও হরিদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, গেজেট নোটিফিকেশনে বুদবুদ থানা বর্ধমান উত্তর মহকুমার অধীনে থাকবে বলে উল্লেখ আছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনিকভাবে যেহেতু বুদবুদ পূর্ব বর্ধমান জেলার অধীনে, সেহেতু থানা এদিককার আদালতের অধীনে থাকা উচিত। অপর সহ সম্পাদক মোল্লা মহতাবউদ্দিন বলেন, আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জেলা ভাগ করেছেন। তার কাছে আমাদের দাবির বিষয়টি উত্থাপন করলে সুফল মিলবে বলে মনে হয়।

Exit mobile version