যারা টাকা নিয়েছে তাদের বাড়ি চলুন, কলার ধরে চৌরাস্তায় দাঁড় করিয়ে টাকা আদায় করবো – দিলীপ ঘোষ
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এসএসসিতে অযোগ্যদের জন্য যে যোগ্যদের চাকরি গেছে তাঁরা আন্দোলন করুন। কোন নেতা বা কাদের তারা টাকা দিয়েছেন, তাদের বাড়ি বাড়ি চলুন। আমরা যাবো সঙ্গে। ঘাড় ধরে টাকা আদায় করে আনবো। বুধবার বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপি পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে একথা বললেন দিলীপ ঘোষ। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকারের সুপ্রিমকোর্টে যাওয়া নিয়ে দিলীপবাবু এদিন বলেন, হাইকোর্টে এর আগে ওনারা গেছেন থাপ্পড় খেয়ে এসেছেন, এবারে দুই গালে থাপ্পড় খাবেন এবং তার সঙ্গে এটাও হবে যারা পয়সা নিয়েছে তাদেরকেও জেলে যেতে হবে। সময়ের অপেক্ষা। অন্যদিকে, ২০১৬-র এসএসসি নিয়ে এই কেলেঙ্কারির মাঝেই ২০১৭-র প্রাইমারি টেট পরীক্ষার প্রশ্ন ভুল মামলা নিয়ে হাইকোর্ট বিশ্বভারতীর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে প্রশ্নপত্র পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়ায় দিলীপবাবু বলেন, দেখুন, যে গন্ডগোল হচ্ছে, কারা কি করছে তা বার করা দরকার। আর গণ্ডগোলের জন্য, এ ভুলের জন্য বা অন্যায়ের জন্য যারা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের প্রতি ন্যায় হওয়া উচিত। এই যে ১৩ লক্ষ না ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থী যারা পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতার সঙ্গে চাকরি পাননি, টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে গেছেন। তাদের আবার ওয়েমার শিট নিয়ে এসে রিভিউ করে যোগ্য লোককে চাকরি দেওয়া উচিত। তা না হলে কি হবে,আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বা সরকারের ওপর মানুষের বিশ্বাস চলে যাবে। পরীক্ষা হবে রেজাল্ট হবে না। যোগ্যপ্রার্থীরা চাকরি পাবে না। অযোগ্য লোকেরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে যাবে। শিক্ষা ব্যবস্থা জলাঞ্জলি হয়ে যাবে, সেটা পরিবর্তন হওয়া দরকার। এত বড় স্টেপ নিয়েছেন মহামান্য আদালত, তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই, বাকিটাও করে আমাদের বিশ্বাসকে যেন বাড়াতে পারেন। বুধবার গলসীর নির্বাচনী জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা তাদের লক্ষ্য। তারা হয় আমাদের কারাগারে ঢোকানোর চেষ্টা করছে অথবা হত্যা করছে। বিজেপি, বাম, কংগ্রেসকে শিথিল করতে হবে। এব্যাপারে দিলীপবাবু বলেন, কারাগারে তো ঢুকতেই হবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারে, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী যদি জেলে যেতে পারে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন যাবে না? তিনি রাজ্যে বড় স্ক্যাম করেছেন, সময়ের অপেক্ষা। শুরু হয়ে গেছে তার পতন। এদিন মমতা বলেন, এখানে বিজেপির প্রার্থী খড়গপুরের সাংসদ ছিলেন। কিন্তু তাঁর দল তাঁকে মেদিনীপুরে টিকিট দেয়নি। সে আমাদের গালাগালি করতে থাকে। প্রত্যুত্তরে দিলীপবাবু এদিন বলেন, উনিও তো নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন কেমন ছ্যাঁকা খেয়ে এসেছেন ভুলে গেছেন? মেদিনীপুরের লোক দিয়েছে নাকখত। সেই জন্য দিলীপ ঘোষ সারা বাংলায় রাজনীতি করে, সংগঠন করেছে। বর্ধমানের কর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। এদিন তাঁরা যা উন্মাদনা দেখিয়েছেন, তার অধিক ভোটে জেতাবেন আমাকে। টিএমসি নিজের ঘর সামলাক। তাদেরকে ভাগলপুর থেকে কেন ক্যান্ডিডেট আনতে হলো? তার উত্তর দিন আগে। উল্লেখ্য, এদিন সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়েও দিলীপবাবু বলেন, বাংলা খাও জয় বাংলা বলো আর রাতে সব ঝান্ডা খোলো, এই চলছে মমতা ব্যানার্জির কালচার তার জন্য ওনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি, আর দিলীপ ঘোষ ওনার ভাষাতেই ওনাকে উত্তর দেবে। মুখ্যমন্ত্রী ভাতারের সভায় বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাকরি দিচ্ছে না, বাংলা যে চাকরি দিচ্ছে তা খেয়ে নিচ্ছে। দিলীপবাবু বলেন, চাল, ডাল, ত্রিপল, শিক্ষা দপ্তরের চাকরি সব বিক্রি করেন ওরা, দেন না। ওরা বিক্রি করতে জানেন। তিনি বলেন, যে লোকগুলোর চাকরি গেছে তার নেতারা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন, সেই টাকাগুলো ফেরত দিয়ে দিন। না হলে ওদেরকে সঙ্গে নিয়ে সেই নেতার বাড়ি যাব আমরা আর কলার ধরে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড় করাবো। দিলীপবাবু এদিন বলেন, বাচ্চারা ভুল করে, ৭০- ৭৫ বছরের একজন মহিলা কি করে বলতে পারেন ভুল হয়েছে, সারা জীবন ভুল করলেন? জীবনে ঠিক তো করুন কিছু একটা। আপনার পার্টির সবাই ভুল করছেন লক্ষ লক্ষ লোক। কোটি কোটি টাকা রোজগার করেছেন, ধরা পড়ে গেলে ভুল? আর দিব্যি খাচ্ছিলেন, চোখ দেখাচ্ছিলেন। স্কুলের শিক্ষক না পাওয়া নিয়ে মমতার বক্তব্যের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, আমরা তো পড়াতে রাজি আছি, কমপক্ষে আমরা যদি পড়াই এরকম চোর তো তৈরি হবে না। তার জন্য টিচার্স বলুন কর্মকর্তা বলুন আমরা সব সাপ্লাই করব, পয়সাও নেব না।