E Purba Bardhaman

সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বজ্রাঘাতের পরিমাণ কমানো যাবে না, বলছেন বিজ্ঞানীরা

Lightning strikes cannot be reduced without increasing awareness, say scientists

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রতিবছরই বাড়ছে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা। এজন্য একদিকে যেমন ব‌্যাপক হারে সচেতনতা বাড়াতে হবে, অন্যদিকে নির্বিচারে তালগাছ কাটা রুখতে হবে। তালগাছের জন্য বজ্রপাতের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে বলে জানালেন প্রাক্তন বিজ্ঞানী এবং আইএমডি-র ইস্টার্ন রিজিওনাল সেন্টারের প্রাক্তন উপ-অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সেমিনার হলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গুণমান নিশ্চিতকরণ সেলের উদ্যোগে “বজ্রপাত ও তার প্রতিরোধে সচেতনতা শিবির”-এ বক্তব্য রাখতে এসে একথা জানিয়েছেন সঞ্জীববাবু। তিনি এদিন বলেন, বজ্রাঘাতে মৃত্যু বা জখম হন সব থেকে বেশি চাষি বা খেতমজুর এবং শিশুরা। এরপরই নির্মাণ কর্মী। তারপর অন্যান্য ক্ষেত্রের মানুষজন। মৃত্যুর একটা বড় কারণ চাষ জমিতে কাজ করার সময় সতর্কবার্তা না শোনার জন্য বা শুনেও না মানার জন্য বজ্রাঘাতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া অনেকেই গাছের নিচে আশ্রয় নিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। এই গাছের নেচে দাঁড়ানোর প্রবণতা শহর অঞ্চলেও দেখা যায়। তিনি বলেন, চাষ জমির পাশেই বা ফাঁকা মাঠে আগে অনেক তাল গাছ থাকত। এতে বজ্রাঘাতের সম্ভাবনা কম হতো। এখন তালগাছের পরিমাণ কমে গেছে। তিনি বলেন, সরকারি দামিনী অ্যাপস-সহ বিভাগের অন্যান্য প্রচার ক্ষেত্রগুলিতে লক্ষ্য রাখতে হবে। রেডিও, টিভিতেও লক্ষ্য রাখতে হবে। লাইটিং অ্যারেস্ট টাওয়ার বসালে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু এত বিশাল পরিমাণ ফাঁকা জায়গায় কে টাওয়ার বসাবে? কে জমি দেবে? তবে এটা করতে পারলে ভাল হয়। দপ্তর একসময় জমির পাম্প হাউসগুলোকে একটু বাড়িয়ে সেল্টার হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে সমস্যা অন্যান্য সময় ওই জায়গায় কী হবে? এই চিন্তা থেকে ওই পরিকল্পনা থেকে সরে আসা হয়েছে। গত ৫ বছরের হিসাবও আমরা দেখেছি, যে কবছর আমরা লাইটিং ডিটেকটার লাগিয়েছি তাতে আমরা দেখেছি বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়েছে। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। পূর্বাভাস আমরা দিচ্ছি ঠিকই। মাঠে যারা কাজ করছেন তাঁদের শুধু বলেই হয় না। যতদিন না আমরা ডোর-টু-ডোর পৌঁছাতে পারছি ততদিন এই সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া রাস্তা নেই। বাচ্চাদের বোঝানো কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থাকে। কিন্তু সেটা করতে হবে। তিনি বলেন, সচেতন করে সেইসব জায়গায় ফল পাওয়া গেছে। সব কৃষক একসাথে মাঠে কাজ করেন না। কৃষকদের নিয়ে গ্রুপ করতে হবে। যারা মাঠে থাকবেন না তাঁরা পূর্বাভাস জানতে পেরে জমিতে গিয়ে সতর্ক করে মাঠ থেকে তাঁদের নিয়ে আসবেন। গ্রুপ করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেও সতর্ক করতে হবে। অন্যান্যদের মধ্যে এদিন এই সেমিনারে হাজির ছিলেন বিজ্ঞান বিভাগের ডিন সুনীল কারফরমা, কলা, বাণিজ্য ও আইন বিভাগের ডিন প্রদীপ চৌধুরি, আইএমডি-র বিজ্ঞানী সত্যব্রত দত্ত প্রমুখ

Exit mobile version