E Purba Bardhaman

জটিলতা কাটিয়ে প্রকাশিত হল ২০১৩ সালের পঞ্চায়েতে নিয়োগের নির্বাচিত প্রার্থীদের নামের তালিকা

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- অবিভক্ত বর্ধমান জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির মোট ২২৬টি শূন্যপদে নিয়োগ করতে প্রায় ৫ বছর লেগে গেল জেলা প্রশাসনের। এর মধ্যে বার কয়েক বদল হয়েছে নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যানের। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ আইনী জটিলতা কাটিয়ে নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধপিতি দেবু টুডুর হাত ধরেই সোমবার প্রকাশিত হল ২১৫জন যোগ্য প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সফল প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ করা হবে বলে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দিলেন নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান দেবু টুডু এবং ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বর্ধমান জেলার (পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায়) গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি পদে এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৪টি পদে মোট ৪০২টি শূন্যপদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়। এই পদের জন্য মোট ৯৮ হাজার কর্মপ্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় বসেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক পদে ৩৯টি, গ্রাম পঞ্চায়েত সহায়ক পদে ১০৯টি, গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মী পদে ১৬০টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সমিতি এডুকেশন অফিসার পদে ১৯টি, অ্যাকাউণ্টস ক্লার্ক পদে ২৯টি, ক্লার্ক কাম টাইপিষ্ট পদে ৩০টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির পিওন পদে ১৬টি শূন্যপদ ঘোষণা করা হয়। লিখিত পরীক্ষার পর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে সফল লিখিত পরীক্ষার প্রার্থীদের ৫জন পিছু ১জনকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। যথারীতি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই মৌখিক পরীক্ষা পর্ব চলে। কিন্তু এরপরেই আইনী জটিলতায় আটকে যায় পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা। ইতিমধ্যেই অভিযোগ ওঠে, জেলা পরিষদের একাধিক কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যদের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের এই কর্মী নিয়োগ নিয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে – যা নিয়ে রীতিমত অস্বস্তি বাড়ে খোদ তৃণমূল দলেই। টাকা নিয়ে চাকরি দেবার এই অভিযোগের জল গড়ায় খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছেও। পরে দলের পক্ষ থেকেই গড়ে দেওয়া হয় একটি নিয়োগ কমিটিও। কিন্তু তাতেও সমস্যার জট কাটেনি। পরে জেলাশাসককে চেয়ারম্যান করে একটি নিয়োগ কমিটিও গঠন করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের মার্চ মাস নাগাদ আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফের নিয়োগ কমিটির পরিবর্তন করা হয়। চেয়ারম্যান হিসাবে জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে নিযুক্ত করা হয়। জেলাশাসককে এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। কার্যত পঞ্চায়েতের এই নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতার পর অবশেষে সোমবার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হল। এদিন সভাধিপতি জানিয়েছেন, মোট ২২৬টি পদের জন্য ২১৫ জনের চুড়ান্ত তালিকা এদিন প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মী পদে ১৬০টি শূন্যপদের জন্য লিখিত পরীক্ষা হলেও তার ফলাফল এখনও ঘোষণা হয়নি। এদিন সভাধিপতি দ্রুত এই ফল ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই এই সফল প্রার্থীদের মেরিট লিষ্ট অনুসারে নিয়োগ করা হবে শূন্যপদ ফাঁকা থাকা জায়গায়। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, চুড়ান্ত প্রার্থীদের মেডিকেল টেষ্ট, পুলিশী ভেরিফিকেশন ইত্যাদিগুলি দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সফল প্রার্থীদের চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে এদিন থেকেই। প্রার্থীরা চিঠি পাবার ১৫দিনের মধ্যে প্রশাসনের কাছে সেই পদে কাজ করতে ইচ্ছুক কিনা তা জানাতে হবে। অন্যথায় তিনি রাজী নন বলে গণ্য করা হবে।

তালিকায় আপনার নাম আছে? জানতে ক্লিক করুন।

তালিকায় আপনার নাম আছে? জানতে ক্লিক করুন।

Exit mobile version