E Purba Bardhaman

১৬ অক্টোবর থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের দপ্তরে নিষিদ্ধ হতে চলেছে প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার

Mahatma Gandhi's 150th birth anniversary celebration & Mission Nirmal Bangla Discussion Meeting. Minister Swapan Debnath

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান):- খোলা জায়গায় মলমুত্র ত্যাগ করার বিরুদ্ধে ওডিএফ প্লাস নামে ১৫দিন আগে যে অভিযান শুরু হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। বুধবার গান্ধী জয়ন্তীর দিনে শেষ হল সেই কর্মসূচী। বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে আয়োজিত হল এই সমাপ্তি অনুষ্ঠান। হাজির ছিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক বিজয় ভারতী, বর্ধমান উত্তরের বিধায়কর নিশীথ মালিক, ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল প্রমুখরাও। হাজির ছিলেন জেলা প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিক সহ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরাও। এদিন ওডিএফ প্লাস নামে শুরু হওয়া এই কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ফের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযানে নামার কথা ঘোষণা করেছেন এদিন জেলাশাসক বিজয় ভারতী। একইসঙ্গে এদিন তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের দপ্তর থেকে নিষিদ্ধ হতে চলেছে প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর অফিস থেকেই এই অভিযান শুরু হবে। এরপর তা প্রতিটি সরকারী দপ্তর এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই সচেতন বার্তাকে পৌঁছে দেওয়া হবে। এদিকে, এদিন বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে আয়োজিত এই কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের সরকারের সমালোচনায় মুখর হলেন বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক। এদিন তিনি জানিয়েছেন, মিশন নির্মল বাংলা অভিযানে সরকারীভাবে যে শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়ার কথা সেখানে উপভোক্তাকে মাত্র ৯০০ টাকা জমা দিতে হয়। কিন্তু তাঁর বিধানসভা এলাকাতেই বহু মানুষ ওই টাকা জমা দিলেও তাঁদের শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে না। এব্যাপারে বারবার প্রশাসনিক স্তরে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা জনগণের কাছে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না। জনপ্রতিনিধি হিসাবে যখন তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে তাঁরা কিছুই উত্তর দিতে পারছেন না। জানা গেছে, শুধু বর্ধমান উত্তর বিধানসভাই নয়, কার্যত গোটা জেলা জুড়েই নতুন ভাবে যে ৬৭ হাজার শৌচাগার নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে (পুরসভা বাদে) এবং গত সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার অঙ্গীকার করা হলেও এদিন প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে ৬৭ হাজারের মধ্যে মাত্র শৌচাগার নির্মাণ হয়েছে ৫ হাজার। অন্যদিকে, এদিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও জানিয়েছেন, একই অবস্থা জেলার সমস্ত ব্লকেই। যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে সেভাবে কাজ করা হচ্ছে না। কার্যত সরকারী দপ্তরের কর্মীরা জনপ্রতিনিধিদের কোনো কথাই শুনছেন না। তার ফলে নিচুতলায় ক্রমশই ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মঙ্গলবার এই স্বাস্থ্যবিধান সংক্রান্ত কাজ করবে। একইসঙ্গে ডেঙ্গু নিয়েও প্রচার করবেন তাঁরা। একইভাবে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকেও তাঁদের সুবিধামত দিন ঠিক করে কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি ৬ মাস অন্তর এব্যাপারে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে নিয়ে রিভিউ করা এবং কাজের নিরিখে তাদের পুরষ্কৃত করার কথা জানিয়েছেন বাগবুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় ১০২জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বাগবুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতবছরের তুলনায় এবারে অনেক আগে থেকেই সতর্কতা নিলেও এবং গত বছর যে সমস্ত জায়গায় ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা দিয়েছিল সেই জায়গাগুলোতেই এবারেও ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে অত্যন্ত সতর্কতা সত্ত্বেও কিভাবে এটা হল – আমাদের প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে আদপেই এই সতর্কতা কতটা নেওয়া হয়েছে? তিনি এদিন জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই মনে হচ্ছে ডেঙ্গু নিয়ে যে কাজ করার কথা ছিল তা হচ্ছে না। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, গোটা জেলায় ৪ হাজার জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁরা যদি সারাদিনে ১ ঘণ্টা এই কাজে সময় দেন তাহলেই অনেক কাজ হয়। কিন্তু তা হচ্ছে না।

Exit mobile version