বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কোনো দাদা, দিদির অংগুলি হেলনে চলবেন না। নির্বাচিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত সদস্য ও সদস্যাদের এভাবেই রবিবার হুঁশিয়ারী দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমুল কংগ্রেসের পুর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি স্বপন দেবনাথ। রবিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পুর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমুল মহিলা কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে মহিলা প্রশিক্ষণ শিবিরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বপনবাবু বলেন,যখনই কোনো নির্বাচন আসে তখনই টিকিট পাবার জন্য উপচে পড়ে ভিড়। অথচ এদিন এই প্রশিক্ষণ শিবিরে নির্বাচিত সদস্যাদের সিংহভাগই অনুপস্থিত। আর এই অনুপস্থিতি দেখে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সাফ জানান, এরকম সদস্যদের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ পরিচালনা করতে কারো নির্দেশ মানার দরকার নেই। কেবলমাত্র দলনেত্রীর নির্দেশ মানুন। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই বিভিন্ন জয়ীদের তিনি দেখতে পাচ্ছেন এনেতা–ওনেতার বগলে বগলে ঘুরছেন। কাউকে দেখা যাচ্ছে গাড়ির পিছনে ঘুরছেন। এভাবে চলবে না। তিনি জানান, দলের নির্দেশেই তাঁরা প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই দলের নির্দেশ তাঁরা মানবেন। রবিবার সংস্কৃতির এই মহিলা প্রশিক্ষণ শিবিরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। এদিন স্বপনবাবু জানতে চান কজন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী হাজির আছেন? কিন্তু সিংহভাগই অনুপস্থিত দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। স্বপনবাবু বলেন, মহিলাদের আসন সংরক্ষণ থেকে একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই সমস্ত মহিলারা যদি দশটি ঘরে গিয়ে এই উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলি তুলে ধরেন তাহলেই লোকসভা ভোটে জয় সুনিশ্চিত। স্বপনবাবু বলেন,অনেকেই বিভিন্ন সুপারিশে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের কেউ কেউ প্রধান,উপপ্রধানও হয়েছেন। কিন্তু তারা দলের প্রধান বা উপপ্রধান হতে পারছেন না। তারা পদে থাকবেন অথচ দলের নির্দেশ মানবেন না,কাজ করবেন না। তাহলে তাদের দরকার নেই। কেবল পদ নয়, দলের জন্য করুন। বুথে বুথে ভাগ হয়ে গিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার করুন। বিজেপি করছে বলে শুনি। কেন আমরা পারছি না – সেটা দেখতে হবে। তিনি বলেন, কোনো দাদার দল করার দরকার নেই। বুথে বুথে প্রচার করতে শুরু করুন। একজন মহিলা ১০জন পুরুষের সমান প্রচার করতে পারেন। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য মহিলা নেত্রী তথা কলকাতা কর্পোরেশনের চেয়ারপার্সন মালা রায়ও বলেন, দলের সৈনিক হিসাবে কাজ করার আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরে ব্যাপকভাবে প্রচারে নামার আবেদন জানিয়েছেন তিনিও। অন্যান্যদের মধ্যে এদিনের সভায় হাজির ছিলেন বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা, বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল, অলোক মাঝি, নার্গিস বেগম, জেলা মহিলা সভানেত্রী তৃষ্ণা সরকার প্রমুখরা।