E Purba Bardhaman

মেমারী হাসপাতালে রোগীরাই শুকাচ্ছেন এক্সরে প্লেট! কটাক্ষ বিরোধী রাজনৈতিক দলের

Memari Hospital patients are drying their own x-ray plates!

মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- মঙ্গলবার সকালে শৌচাগার থেকে বেরোনোর সময় পরে গিয়ে আহত হন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। প্রথমে বিষয়টিকে কিছুটা অগ্রাহ্য করলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই তাঁর পায়ের যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় মন্ত্রী পৌঁছান মেমারী গ্রামীণ হাসপাতালে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় ৭ টা ২০ নাগাদ মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি মেমারী হাসপাতালে যাবার পর চিকিৎসকরা তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসাও করেন। এরপরই তাঁকে এক্সরে করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যথারীতি মন্ত্রী হাসপাতালেই এক্সরে করতে চান। আর তখনই তিনি জানতে পারেন, সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টো পর্যন্ত ওপিডি চালু থাকার সময়েই কেবল এই হাসপাতালে এক্সরে করা হয়। যা শুনে রীতিমতো বিস্মিত মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি বলেন, এতবড় হাসপাতালে রাত্রে এখানে এক্সরে হয়না তা তিনি জানতেন না। তিনি এই অসুবিধা দূর করার চেষ্টা করবেন। এরপরই তিনি গাড়ি চেপে রওনা হয়ে যান। আর তারপরেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে ব্যাপক রাজনৈতিক তরজা। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের মধ্যেই খোদ মন্ত্রীর এই মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে জেলা জুড়ে। মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি জানিয়েছেন, তাঁর ডান পায়ের কনিষ্ঠ আঙুলে চোট লাগে। সন্ধ্যা হতেই ব্যথা ক্রমশ বাড়তে থাকায় তিনি চিকিৎসার জন্য যান মেমারী গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক দেখার পর জানান এক্সরে করার প্রয়োজন আছে। এরপর তিনি এই হাসপাতালেই এক্সরে করার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই হাসপাতালের তরফে তিনি জানতে পারেন হাসপাতালে ওপিডি-র সময় এক্সরে হলেও রাতে এক্সরে করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এদিকে, খোদ রাজ্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রীর এক্সরেকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা নিয়ে যখন হৈ চৈ চরমে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা সেই সময় বুধবার সকালে এই হাসপাতালে গিয়ে শোনা গেল অদ্ভুত অভিযোগ। রোগী ও তাঁদের পরিজনের অভিযোগ, সকাল থেকে রোগীদের দৌড়াদৌড়ির পর এক্সরে প্লেট শুকাতে হচ্ছে রোগীদেরই। রোগীকেই এক্সরে প্লেট ধরে আউটডোরের সামনে বসে শুকাতে হচ্ছে। কারণ এই প্লেট শুকালে তবেই দেখানো যাবে ডাক্তার। তাই এক্সরে প্লেট হাতে আউটডোরের সামনে রোগীদের লাইন। শুধু তাই নয়, রোগীদের অভিযোগ এখনও এই হাসপাতালে অ্যানালগ পদ্ধতিতেই এক্সরে করা হয়। হাসপাতালে ডিজিটাল মেশিনই নেই। ফলে অধিকাংশ সময়ই রিপোর্ট বোঝাই যায় না। ফলে সঠিক চিকিৎসায় সৃষ্টি হচ্ছে অসুবিধা। বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, রাজ্যের মন্ত্রীকেই চিকিৎসা করাতে এসে সম্পূর্ণ চিকিৎসা করাতে না পেরে ফিরে যেতে হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি সহজেই অনুমেয়। আমরা মন্ত্রী মশাইয়ের সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থারও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। অন্যদিকে, মেমারী গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ দেবাশীষ বালা জানিয়েছেন, মন্ত্রীকে এক্সরে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনে খাবার জন্য ব্যথার ঔষধ দেওয়া হয়েছে। তিনি এক্সরের অসুবিধা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। ফলে অসুবিধা হচ্ছে। এদিন মন্ত্রীকেও এই অসুবিধার কথা জানানো হয়েছে। এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ডিজিটাল এক্সরে মেশিন খুব শীঘ্রই চালু হতে চলেছে এই হাসপাতালে।

Exit mobile version