E Purba Bardhaman

মুখ্যমন্ত্রীর অভাবে ছন্দপতন ঘটল বর্ধমানের মাটি উৎসবের

Minister Swapan Debnath inaugurated the 7th Mati Utsav

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- হুগলীর চুঁচুড়া থেকে যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবছরের মাটি উত্সবের সূচনা করলেন সেই সময় মাটি উত্সবের মূল উত্পত্তিস্থল বর্ধমানের মাটি তীর্থ কৃষি কথা স্থায়ী প্রাঙ্গণে ৭ম বছর মাটি উত্সবের সূচনা করলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। গত ৬বছর ধরে বর্ধমান জেলাকে ঘিরেই অনুষ্ঠিত হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের এই জনপ্রিয় মাটি উত্সব। মাটি উত্সবকে ঘিরে কেবলমাত্র কৃষকরাই নয়রীতিমত সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। এবছর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মাটি উত্সবকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জেলায় জেলায়। আর তাতেই এক লহমায় উত্পত্তিস্থলের মাটি উত্সবের আগ্রহ ও উন্মাদনা ব্যাপকভাবেই ধাক্কা খেল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আগ্রহে বর্ধমান জেলার পানাগড়ের বিরুডিহায় শুরু হয়েছিল প্রথম মাটি উত্সব। সেখানে ২ বছর চলার পর মাটি উত্সবের জায়গা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় তা সরিয়ে নিয়ে আসা হয় বর্ধমানে। তৃতীয় বছর মাটি উত্সব অনুষ্ঠিত হয় বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে। আর তখনই মাটি উত্সবের আগ্রহ ও উন্মাদনা দেখে মুখ্যমন্ত্রী মাটি উত্সবের জন্য স্থায়ী প্রাঙ্গণের চিন্তা করেন। সেই মত বিভিন্ন জায়গা খোঁজার পর বর্ধমানের কালনা রোডের জেলা বীজ খামারের ভেতর তৈরী হয় মাটি তীর্থ কৃষি কথার স্থায়ী প্রাঙ্গণ। ২০১৬ সাল থেকেই এই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে মাটি উত্সব। যার মূল আকর্ষণ ছিলেন খোদ রাজ্যের মুখ‌্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই প্রাঙ্গণই আজ কার্যত জনকোলাহল শূন্য। হাতে গোণা কিছু উত্সাহী মানুষ আর দূরদূরান্ত থেকে বাসে চাপিয়ে নিয়ে আসা মানুষের ভিড় ছাড়া গোটা মাটি উত্সবের প্রাঙ্গণই ছিল ফাঁকা। আর যেখান থেকে মাটি উত্সব গোটা রাজ্যে নজীর সৃষ্টি করেছে সেখানে এদিন মাটি উত্সবের সূচনা করলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ১০০র ওপর ছাপিয়ে যাওয়া স্টলের বদলে মাত্র ৩৬টি স্টল নিয়ে এবারের মাটি উত্সব সাধারণ মানুষকে হতাশ করে দিয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ছাড়াও কৃষি সচীব সম্পদরঞ্জন পাত্রদুই সাংসদ মমতাজ সংঘমিতাসুনীল মণ্ডলজেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়াসহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুজেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব সহ জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরাও।

স্বপনবাবু এদিন বলেনমাটি গর্ভবতী মায়ের থেকে কোনো অংশে কম নয়। আর সেই মাটিকে নিয়েই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উত্সব করে দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেনবর্ধমান জেলায় ১৪ হাজার কৃষককে ফসল বীমা যোজনার আওতায় আনা হয়েছে। ১ লক্ষেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তিনি বলেনরাজ্যে এখন ডিম উত্পাদনে পিছিয়ে রয়েছে। গোটা রাজ্যে প্রায় ৩৭ লক্ষ ডিমের ঘাটতি রয়েছে। আর সেই ঘাটতি মেটাতে গোটা রাজ্যে ১ কোটি মুরগী ও হাঁসের বাচ্চা দেবার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮৭ লক্ষ বাচ্চা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আশা করছেন আগামী ১ বছরের মধ্যে এই ডিমের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গতস্বপনবাবু এদিন বলেনগরুছাগল প্রভৃতি গৃহপালিত পশুদের জন্য বীমার পাশাপাশি তাদের প্রিমিয়াম দেবার ব্যবস্থা চালু করলে পশুপালনে আরও বেশি আগ্রহ বাড়বে। এদিন এই মাটি উত্সবের মঞ্চ থেকে জেলার ১১জন কৃষকের হাতে কৃষকরত্ন পুরষ্কার এবং বিভিন্ন সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছেমাধ্যমিকউচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যই এবারের মাটি উত্সবের সময় ও দিনের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। পাশাপাশি অন্য কাজে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যস্ততায় এবার মাটি উত্সবের জৌলুস হারিয়েছে এমনটাই মনে করছেন আধিকারিকরা।

Exit mobile version