E Purba Bardhaman

ক্ষমতা যত বাড়ে তত নত হতে হয় – বর্ধমানে বললেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী

Ministers Shashi Panja and Snehasish Chakraborty addressed the Trinamool Congress counter protest meeting of MLA Suvendu Adhikari's BJP meeting in Burdwan.

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গঙ্গায় আরতি নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে যখন বির্তক তুঙ্গে উঠেছে তখন বর্ধমানে এসে বিজেপি নাটক করছে বলে জানিয়ে গেলেন রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। বিজেপির গঙ্গা আরতি সম্পর্কে এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এরা মেকি ধর্মীয় প্রেম দেখায়। বিজেপি হচ্ছে কিছু শিল্পপতি এবং কিছু উচ্চবর্ণীয় মানুষের দল। এরা মুখে হিন্দু ধর্মের কথা বলে। আমরা দেখেছি উত্তরপ্রদেশে দলিত মানুষ, গরীব মানুষ অত্যাচারিত হচ্ছে। আজকে গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হয়ে গেছে। লাখো লাখো মানুষ সারা ভারত থেকে এখানে আসে, রাজ্য সরকার তার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করেছে এবং সব ধরনের সুব্যবস্থা রেখেছে। এখান থেকে সেখানে এত মানুষ পৌঁছাবে। তাই যাতে নতুন করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায় সেজন্যই নাটক করছে বিজেপি। অন্যদিকে, সম্প্রতি কাটোয়ায় বাস দুর্ঘটনার পর গোটা জেলা জুড়েই পরিবহণ দপ্তর বাসের ওপর নজরদারী শুরু করেছে। তাতেই উঠে এসেছে বাসের ফিটনেসের চুড়ান্ত অভাব। এব্যাপারে এদিন পরিবহণ মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়েছেন, গোটা বাংলা জুড়ে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ গাড়ি রয়েছে। ফিটনেস ফেল হলে তাকে নোটিফিকেশন করা হয়, চিঠি পাঠানো হয়। যারা টাইম মতো করে না প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়। তিনি এদিন জানিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র নিয়ে রাস্তায় চলতে হবে এসব ক্ষেত্রে কোনো রকম বরদাস্ত করা হবে না। ফিটনেস ছাড়া রাস্তায় চলা যাবে না। যারা ফিটনেস করেনা তাদের উচ্চ হারে ফাইন করা হয়। আইন ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই পাশাপাশি প্রজাপতি সিনেমা নিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী এদিন তাঁর জনপ্রিয়তা কেউ কাড়তে পারবে না বলে যা বলেছেন সে সম্পকে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, সিনেমা সিনেমার মতো চলবে ভালবাসেন তারা তাদের সিনেমা দেখবেন এর সাথে রাজনীতি কোন যোগ নেই। উল্লেখ্য, এদিন বর্ধমানের গাংপুর স্বস্তিপল্লী মাঠে বর্ধমান ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস এবং বৈকুণ্ঠপুর ১ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস ও শাখা সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে কেন্দ্র বিরোধী প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়। রবিবার এই মাঠেই শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমত বিস্ফোরক একাধিক অভিযোগ করে যান। শুভেন্দুর পাল্টা তৃণমূল এই সভা ডাকে। আর এই সভার মূল বক্তা ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন দুই বিধায়ক খোকন দাস, নিশীথ মালিক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলা পরিষদের দুই কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম ও মহম্মদ ইসমাইল, বিডিএ-র চেয়ারম্যান কাকলী তা গুপ্ত, বর্ধমান ২ ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনার, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার, বৈকুণ্ঠপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব ব্যানার্জী সহ জেলা নেতৃবৃন্দরা। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে শশী পাঁজা বলেন, দু’দিন আগে বিজেপির মিটিং হয়েছে। মিটিং হয়েছে, আবার মঞ্চ থেকে মানি ব্যাগ চুরি হয়ে গিয়েছে। নেতৃত্বের চুরি! কী ভয়ঙ্কর! তিনি বলেন, তৃণমূল প্রতিশ্রুতি দিলে, করে থাকে। ১ কোটি ৮৬ লক্ষ মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়ে থাকে। এটা সম্মান হিসেবে দেখি। মা’দের লক্ষ্মীরূপে দেখেন মমতা। কেউ কেউ ভিখারি বলছেন। তাঁরা চান না এ সব। কেন্দ্র সরকারের বেটি পড়াও বেটি বাঁচাও, বিজ্ঞাপন আছে। কিন্তু উপকার নেই। রাজ্যে উন্নয়ন হচ্ছে। ভিক্ষা দিচ্ছে বলছেন কিছুজন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। দুয়ারে সরকার পুরস্কার। প্রতিবাদ করতে হবে। ওরা কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। তিনি এদিন বলেন, ভুল ত্রুটি থাকলে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবেন। আমাদের মন্ত্রীরাও তো জেলে আছেন! বিজেপি ওয়াশিং মেসিন। অন্যদিকে, বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ভোটের আগে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রতিটি নির্বাচনের আগে মোদী মায়াজাল, স্বপ্ন তৈরি করে। ভোটের পরে ভুলে যান। সে জন্য নানারকম কুৎসা প্রচার করতে হয়। আমাদের দলের অনেকে পালিয়ে গেলেন। বিজেপি ছাড়া বাঁচা যাবে না। দু কোটি ৮৮ লক্ষ ভোট পেয়েছি। বিনয়ী হতে হবে। ক্ষমতা যত বাড়ে তত নত হতে হয়। বিরোধী দলের নেতা মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। ১০০ দিনের টাকা হকের টাকা। কারুর বাপের টাকা নয়। কেন্দ্রের নয়। বন্ধ রাখতে পারে না। এটা সাংবিধানিক অধিকার। আবাসের টাকা আটকে দিচ্ছে। বিরোধী নেতা জনবিরোধী নেতা। টাকা আদায়ের জন্য লড়াই চলবে।

Exit mobile version