E Purba Bardhaman

ব্লক সভাপতি হিসাবে ‘বিতর্কিত’ একজনকে নিয়োজিত করার দাবীতে ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বিধায়কের চিঠি’ ঘিরে তোলপাড়

বিপুন ভট্টাচার্য, আউশগ্রাম (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকার তিনটি ব্লকে কোনো সংখ্যালঘু ব্লক সভাপতি না থাকায় ‘মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা খোদ বিধায়কের চিঠিকে’ ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গেল জেলা জুড়ে। উল্লেখ্য, বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করার কিছুদিন আগেই আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম এবং মঙ্গলকোট বিধানসভাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাঠামোয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কার্যত অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে এই তিনটি বিধানসভাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টর অনুগত হিসাবে পরিচিত আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডারের ব্লক সভাপতি হিসাবে নিয়োগ করার এই চিঠি সোস্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ঝড় তুলে দিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী হিসাবে উল্লেখ করে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বিধায়কের নাম করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ওই চিঠিতে বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার লিখেছেন, আউশগ্রাম বিধানসভার মধ্যে আউশগ্রাম ১ ও ২ এবং গুসকরা শহর এই তিনটি জায়গাতেই কোনো সংখ্যালঘু সভাপতি নেই। তিনি লিখেছেন, এর ফলে দল সম্পর্কে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হচ্ছে কর্মী মহলে। অভেদানন্দ থাণ্ডারের নামে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেলার ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা হলেও এই তালিকায় এই তিনটি ব্লকের কোনো সংখ্যালঘু সভাপতিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রীকে লিখেছেন, আউশগ্রাম ২ ব্লকের সংখ্যা লঘু সভাপতি করা হোক সেখ আব্দুল লালন ওরফে দাতা লালনকে। আর বিধায়কের নাম করে এই চিঠিই এখন সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। এব্যাপারে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি এস আর ব্যানার্জ্জী রীতিমত সমালোচনা করে জানিয়েছেন, যে ব্যক্তির নাম বিধায়ক তুলে ধরেছেন সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধ বালি কারবার-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে বিধায়ক ব্লক সভাপতি করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন – এর অর্থই বিধায়কের সঙ্গে তাঁর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এসআর ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশী হিন্দুদের ভোটার তালিকায় নাম তুললে বিজেপির সুবিধা হবে। তাদের নাম যেন তোলা না হয়। আর আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ আবার সংখ্যালঘু তাস খেলে ব্লক সভাপতি হিসাবে একজন সংখ্যালঘুই নিয়োজিত করতে চাইছেন। তিনি বলেন, তৃণমূলই সাম্প্রদায়িক এবং ধর্ম নিয়ে যে রাজনীতি করে দুই বিধায়কের কর্মকাণ্ডেই তা প্রমাণিত। যদিও এব্যাপারে খোদ বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার জানিয়েছেন, তিনি এরকম কোনো চিঠি দেননি। তাঁর প্যাড ও সই জাল করা হয়েছে। যদিও তাঁর প্যাড ও সই জাল করার ঘটনায় তিনি এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগই থানায় করেননি বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, এর আগেও রাজ্যের মন্ত্রী তথা মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে ব্লক সভাপতি না করায় দলের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন। এদিকে, এই চিঠিকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান উতোর শুরু হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডু জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিধায়ক জানিয়েছেন, তাঁর নাম করে চিঠি জাল করা হয়েছে। এব্যাপারে বিধায়ককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।


Exit mobile version