বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন শর্মিলা সরকার। কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে কর্মরত রয়েছেন শর্মিলা সরকার। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের বাসিন্দা শর্মিলা দেবী। গতবারের জয়ী প্রার্থী তথা সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে সরিয়ে শর্মিলাদেবীকে প্রার্থী করার পরই বিস্ফোরক সাংসদ সুনীল মণ্ডল। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দেগেছেন সুনীলবাবু। আর তাতেই ভোটের হাওয়া আরও গরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এদিন প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই প্রতিক্রিয়ায় সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, আমার নাম সব সময় থাকতে হবে তাঁর মানে আছে? এখন নতুনরা এলেন তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের এই প্রার্থীর বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। দিদি আমার পাশে ছিলেন। তিনি বলেন, জানিনা আমি জেলা সভাপতি, মন্ত্রীর কী অপরাধ করেছি। এদের কল্যাণেই আমার এই ‘ভালো’ হয়েছে। সবাই আমার পক্ষে। কিন্তু দুঃখের বিষয় রবীবাবু কংগ্রেসকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য মহম্মদ ইসমাইল, বাগবুল ইসলাম, দেবাশীষ নাগ-সহ অনেককেই সরিয়েছেন। এবার আমাকেও সরানো হলো। ওদের বশ্যতা স্বীকার করতে হবে। সেটা আমি করবো না। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথের পদতলে যে থাকবে না তাঁরা কেউ নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। সুনীল মণ্ডল বলেন, রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথ আমাকে অপমান করেছেন। এদের দাদা বলতে ঘেন্না হয়। এদের অত্যাচার শুধু আমার উপর নয়, যারা সত্যিকারের কাজ করে পার্টিটাকে ভালোবাসেন তাঁদের উপরও। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথ কাউকে দু-চার বছরের বেশি কাছে রাখেন না। সেইভাবে আমি ১০ বছর আছি। অনেক লড়াই করে থাকতে হয়েছে। যাক আর লড়াইটা করতে হবে না। তাঁকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি শুধু রানিং সাংসদ নয় ১ লক্ষ ভোটে জেতা রানিং সাংসদ। দল যেটা ভালো বুঝেছে করেছে। একটাই দুঃখ মমতাদি যাঁদেরকে বিশ্বাস বেশি করেন, যাঁদেরকে বেশি ভালোবাসেন তাঁরা মমতাদির সাথে গর্দারি করেন। এটাই আমার একটা দুঃখ। তিনি বলেন, স্থানীয় ভালো প্রার্থী দিতো ঠিক আছে। তিনি তো দীর্ঘদিন আছেন, আর না থাকতে পারেন। সব সময় তাঁকেই থাকতে হবে তার মানে নেই। তিনি বলেন, আমি দুর্গাপুরে ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে একটা প্রজেক্ট করছি। সেটা কতদূর সফল হবে জানিনা! ফ্ল্যাইওভারগুলো আমি রেডি করেছিলাম। সেটাও কতটা কী হবে আমি জানি না। দল ভালো বুঝেছে করেছে। আমি পাওয়ার এনার্জি স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য। মমতাদিকে আমি ইলেক্ট্রিসিটি ডিপার্টমেন্টে ১০ হাজার কোটি টাকা এনে দিয়েছি। সুনীল বলেন, জেলায় আমি কোনও দিনই কারও বশ্যতা স্বীকার করিনি। আমি দিদির বশ্যতা ছাড়া কারও বশ্যতা স্বীকার করিনা। কাজ না করে স্বপন দেবনাথের রুমে গিয়ে বসে থাকা, রবি চ্যাটার্জির সেবা করা এটা আমার কোনও দিনই হবে না। যাকে প্রার্থী করেছে তাঁর হয়ে প্রচারে নামবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দল কী বলে সেটার উপরে ভাবনা আছে। দলের বলার উপর। দায়িত্বটা তো স্বপন দেবনাথ ও রবি চ্যাটার্জীর। ওরা জেতাবেন। ওখানে আমাকে দিলে বিপদ মনে করতে পারে। ওরা তো আমাকে বিশ্বাস করবে না। আমার কাছে প্রচুর ফোন আসছে। অনেকেই দুঃখিত। আমার এলাকায় প্রচারে নামবো না, কারণ কোনও কারণে দলের বিরুদ্ধে রেজাল্ট গেলে আমার উপর চাপ আসবে। বলা হবে আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। আমাকে দল অন্য কোথাও কাজে লাগালে আমি রাজি আছি।