E Purba Bardhaman

নিরাপত্তা চেয়েও না পাওয়ায় নার্সিংহোম মালিকদের বিক্ষোভ

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে বর্ধমানের গোদা এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। রোগীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তীব্র বচসা হয়। বচসা চলাকালীন হাসপাতালের লোকজনকে নিগৃহীত করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার বিষয়ে রোগীর পরিবারের তরফে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়নি। মোটা টাকার বিল করা হয়। পরে চাপে পড়ে তা কমানোর কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখেন নি। বিল বাড়াতে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয় রোগীকে। এনিয়ে বলতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লোকজন নিয়ে এসে চাপ সৃষ্টি করে। অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সিইও শ্রীধর বন্দোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রোগীর পরিবারের লোকজন ঝামেলা বাধায়। এমনকি হাসপাতালের কয়েকজন কর্মীকে মারধর করা হয়। সাহায্য চাওয়ার পরও পুলিস তা করেনি। উল্টে থানার আইসি দুর্ব্যবহার করেছেন। প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে শহরের কার্জন গেট এলাকায় বিভিন্ন নার্সিংহোমের মালিক ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ দেখান। আইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইসি তুষারকান্তি কর। তিনি বলেন, রোগীর পরিবারের লোকজন ঠিকমতো যাতে চিকিৎসা হয় তার দাবি জানাচ্ছিলেন। রোগীকে ৩ দিন ধরে ভরতি করে রাখার পর ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের লোকজন। খবর পাওয়া মাত্র পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারের লোকজনকে হটিয়ে দেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু, মানবিক কারণে তা করা হয়নি। এরপর নার্সিংহোম মালিক সংগঠনের এক নেতা ফোন করে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। রোগীর পরিবার অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগটি আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের নির্দেশ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসি থানার ভাসাপুরের বাসিন্দা বিমল চন্দ্র রায় (৬৭)-কে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালটিতে ভরতি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার কথা বলা হয় হাসপাতালের তরফে। এতে আপত্তি করেন পরিবারের লোকজন। তাঁদের বক্তব্য, ভরতির তিনদিন পর রোগীকে ভেন্টিলেশনে পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে। কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করানো হয়নি। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা চায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। পরে চাপ দেওয়ায় বিল কমিয়ে দেবে বলে। টাকা আদায়ের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে ভেন্টিলেশনে পাঠানোর পরামর্শ দেয়। নার্সিংহোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের দক্ষিণবঙ্গের সম্পাদক শেখ আলহ্বাজউদ্দিন বলেন, রোগীর ঠিকঠাক চিকিৎসা হয়েছে। রোগীর পরিবারের লোকজন গণ্ডগোল বাধালে আইসির কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু, তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। উল্টে দুর্ব্যবহার করেন আইসি। আইসির অপসারণ দাবি করেছি আমরা। বিষয়টি প্রশাসনের সব মহলে জানানো হবে। তারপরও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে নার্সিংহোম বন্ধ করে দেব আমরা।

Exit mobile version