বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমান জেলার ৩৯১টি শিশুর অপুষ্টি দূর করতে উদ্যোগ নিল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে পোষণ প্রকল্পে এই ৩৯১টি শিশুর অপুষ্টি দূর করতে বর্ধমান জেলা পরিষদ ১৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি জানিয়েছেন, এছাড়াও ওই শিশুদের পরিবারদের বিশেষভাবে আর্থ সামাজিক অবস্থার যাতে উন্নতি হয় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অপুষ্টির শিকার শিশুদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে মুরগীর বাচ্চা, ফলের গাছ। এছাড়াও ১০০ দিনের প্রকল্পে যাতে তারা ১০০দিনই কাজ পেতে পারে সে ব্যাপারেও নির্দেশ জারী করা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই প্রধানমন্ত্রী এই পোষণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। দেশ থেকে শিশুদের অপুষ্টি দূর করার এই কর্মসূচীতে ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য অগ্রণী ভূমিকাও নিয়েছে। পুর্ব বর্ধমান জেলায় ২৩টি ব্লকের ২৪টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৮১১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার শিশু এবং ৭৯ হাজার ৩০০ প্রসূতি মায়ের জন্য খাদ্যও বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু তারই মাঝে সম্প্রতি সার্ভে রিপোর্টে উঠে এসেছে এই ৩৯১টি শিশুর অপুষ্টির চিত্র। এদিন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এই শিশুদের অপুষ্টি দূর করতে রাজস্থানের একটি কোম্পানীর তৈরী করা পুষ্টিবর্ধক একটি বিশেষ ধরণের খাবার তাঁরা আগামী ৬ মাস এই শিশুদের বিতরণ করবেন। ইতিমধ্যেই এই খাবার খণ্ডঘোষ এবং রায়না–২ ব্লকে চালু করা হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। তাতে ভাল সাফল্য মেলায় এবার গোটা জেলা জুড়েই তা পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতেই তাঁদের এই বিশেষ ধরণের খাবার সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী দেওয়া হবে।
এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু শিশুদের অপুষ্টির ক্ষেত্রে মায়েদেরও একটি ভূমিকা থাকে তাই মায়েদের জন্য কি ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। অপুষ্টিজনিত রোগে ভোগা শিশুদের পাশাপাশি তাঁরা অপুষ্টি শিশুর মায়েদেরও পৃথকভাবে খাবারের বন্দোবস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই পাশাপাশি ওই শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে গোটা জেলাকে অপুষ্টিমুক্ত করতে তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। উল্লেখ্য, গোটা জেলায় এই অপুষ্টিজনিত শিশু বেশী রয়েছে মেমারী–২ ব্লকে ৩৩টি এবং তারপরেই রয়েছে জামালপুরে ২৮টি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, প্রতিটি শিশুর প্রতি বিশেষ নজরদারীর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার একজন সরকারী অফিসারকে নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা নিয়মিত তদারকি করবেন ওই শিশুদের। এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সহকারী শম্পা ধাড়া, জেলা আইসিডিএস প্রকল্পাধিকারিক অনুপম দত্ত, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী প্রমুখ।