E Purba Bardhaman

ডাকঘরের টাকা চুরিতে ধৃত রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বেঁকে বসল

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কোষাগার কাণ্ডে ধৃত বাপন কর্মকার রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করল। তাকে রাজসাক্ষী করতে পেরে উৎফুল্ল ছিল পুলিশ। পুলিশি হেপাজতে থাকা অবস্থায় তাকে বিশেষ খাতির যত্ন করা হয়। আদালতেও তার বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। তাতে গলে গিয়ে রাজসাক্ষী হতে চায় বাপন। কিন্তু, শনিবার তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রাজসাক্ষী হিসাবে জবানবন্দি দিতে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে তার কিছু জানা নেই এবং সে চুরির ব্যাপারে কিছু বলতে চায় না বলে সাফ জানিয়ে দেয় বাপন। এরপরই তার বয়ান নথিভূক্ত করা বন্ধ করে দেন তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অমর্ত্য চক্রবর্তী। বাপনের আইনজীবী পীযূষরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিশ বাপনকে ভুল বুঝিয়েছিল। রাজসাক্ষী হলে তার শাস্তি হবেনা বলে তাকে আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়ান দিতে গিয়ে বাপনের ভুল ভাঙে। রাজসাক্ষী হলেও যে তার শাস্তি হতে পারে তা বুঝতে পেরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বাপন। সে যে বয়ান দিতে চায়নি তা বিচারক নির্দেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমানের মুখ্য ডাকঘর থেকে ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা কোষাগার ভবনের আয়রন চেস্টে রাখা হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে চেস্ট খুলে ৫৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুরির বিষয়টি জানতে পারেন ডাকঘরের অফিসাররা। ডাকঘরের তরফে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জেলা পুলিসের কনস্টেবল সুরজিৎ সিংমুড়া, তার দিদি অন্নপূর্ণামণ্ডল, ভাগ্নে বাবাই দে, সুপ্রিয় মালিক ও গোপীকৃষ্ণ দে-কে গ্রেপ্তার করে। সুরজিৎ এসপি অফিসের নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বাঁকুড়া কোতুলপুর থানা এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েক দফায় ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। দিনকয়েক আগে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ বাপনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে হেপাজতে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে, তার কাছ থেকে কোনও টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বাপনকে বর্ধমান থানার পুলিশ ধরতে পারেনি। তাকে ধরে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। পুরো টাকা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের তদন্ত প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে। রাজসাক্ষী হয়ে বাপন কিছু স্বীকারোক্তি দিলে তা পুলিশের তদন্তের গাফিলতিকে কিছুটা ঢাকত। কিন্তু, বিচারকের কাছে বাপন বয়ান না দেওয়ায় পুলিশের মুখ পুড়ল বলে মত আইনজীবীদের।

Exit mobile version