বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানে সরকারি কোষাগার ভবন থেকে ডাকঘরের ৫৫ লক্ষাধিক টাকা চুরির ঘটনায় ধৃত বাপন কর্মকারকে রাজসাক্ষী করতে চায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় সে চুরিতে জড়িত থাকার কথা কবুল করেছে। ঘটনার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সে স্বীকারোক্তি দিতে চায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ১০ দিনের পুলিশি হেপাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বাপনকে ফের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বাপনের স্বীকারোক্তি নথিভূক্ত করার জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বাপনের বয়ান নথিভূক্ত করানোর জন্য নির্দেশ দেন সিজেএম। শুক্রবার বাপনের বয়ান নথিভূক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক। এদিকে পুলিশি হেপাজতে থাকা অবস্থায় বাপনের উপর মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার আইনজীবী পীযূষরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশি হেপাজত থেকে পেশ করার পর সরাসরি ধৃতের স্বীকারোক্তি নথিভূক্ত করা যায় না বলে দাবি করেন বাপনের আইনজীবী। বয়ান নথিভূক্ত করার আগে বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার জন্য ধৃতকে পৃথক সেলে রাখা উচিত বলে জানান পীযূষবাবু। ধৃত অন্য বন্দিদের সঙ্গে মিশে তদন্তকে নষ্ট করে দিতে পারে বলে অভিযোগ করেন তদন্তকারী অফিসার। ধৃতকে বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে শুক্রবার ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমানের মুখ্য ডাকঘর থেকে ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা কোষাগার ভবনের আয়রন চেস্টে রাখা হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে চেস্ট খুলে ৫৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুরির বিষয়টি জানতে পারেন ডাকঘরের অফিসাররা। ডাকঘরের তরফে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জেলা পুলিশের কনস্টেবল সুরজিৎ সিং মুড়া, তার দিদি অন্নপূর্ণা মণ্ডল, ভাগ্নে বাবাই দে, সুপ্রিয় মালিক ও গোপীকৃষ্ণ দে-কে গ্রেপ্তার করে। সুরজিৎ এসপি অফিসের নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বাঁকুড়া কোতুলপুর থানা এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েক দফায় ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। দিনকয়েক আগে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ বাপনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে হেপাজতে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে, তার কাছ থেকে কোনও টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিন আদালত চত্বরে বাপন জানায়, চুরির পর টাকার থলি সে অন্নপূর্ণার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সামান্য কিছু টাকা ছাড়া কিছুই পায়নি সে। তাই, রাজসাক্ষী হতে চায় সে।