E Purba Bardhaman

মা-বাবার প্রতি অভিমানে ৬ বছরের মেয়ে থানায় এসে আব্দার করল তাকে একটা কাজ দেওয়া হোক

One child who wanted to job in the Burdwan police station

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সামনেই লোকসভা ভোট। স্বাভাবিকভাবেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যস্ততা বেড়েছে পুলিসের। তারই মধ্যে শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে থানায় সটান হাজির বছর সাতের এক বালিকা। পুলিসকাকুদের কাছে তার কাতর আরজি, আমার বাবা-মা মারা গিয়েছেন। আমাকে কাজ দিন। বালিকার এই কথা বিশ্বাস হয়নি পুলিসকাকুদের। তবে, ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা হতচকিত হয়ে পড়েন। বাচ্চা মেয়েটি কাজ করার কথা বলায় বিস্ময় ছড়ায় পুলিসকর্মীদের মধ্যে। তাঁরা ভুলিয়ে ওই বালিকাকে শান্ত করেন। আস্থা অর্জনের জন্য তাঁর জন্য চকলেট ও মিষ্টি আনা হয়। চেয়ারে বসিয়ে আদর করে তাকে মিষ্টি ও চকলেট খাওয়ানো হয়। তারই মধ্যে নানাভাবে কথা বলে আসল ঘটনা জানার চেষ্টা করেন পুলিসকর্মীরা। প্রথমে অবশ্য মুখ খুলতে চায়নি খুদে মেয়েটি। পরে, সে সব কথা খুলে বলে। পুলিসকে সে জানায়, বাবা-মা বাড়িতে আছেন। কিন্তু, তাঁরা বকাবকি করেছেন। সে জন্য বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে সে থানায় নালিশ জানাতে এসেছে। আসল কথা জানার পর বিস্ময় কাটে পুলিসকর্মীদের। ভাব জমিয়ে বালিকার কাছ থেকে তার বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর জেনে নেওয়া হয়। তারপর তার বাবা-মাকে ফোন করে থানায় আসতে বলা হয়। বাইরে থাকায় তার বাবা আসতে পারেন নি। পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে ওই বালিকার মা থানায় আসেন। মেয়েকে থানায় দেখে তিনি কাঁদতে শুরু করেন। বর্ধমান থানার আইসি ওই বালিকার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনার কথা তাঁর কাছ থেকে শোনেন। তারপর মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান মা। থানার এক অফিসার বলেন, ওই বালিকার বাড়ি শহরের গোলাপবাগ এলাকায়। সে শহরের একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। এদিন সকালে সে কিছু কিনে দেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু, বাড়ি থেকে তা কিনে দেওয়া হয়নি। তাকে নিজে কাজ করে জিনিস কেনার কথা বলা হয়। তার থেকেই অভিমানে মেয়েটি থানায় এসে বাবা-মায়ের নামে নালিশ জানাতে চায়। ওইটুকু বাচ্চা মেয়ে প্রথমে বাবা-মা নেই বলেছিল। এটা খুবই ভাবনার বিষয়। এতটুকু মেয়ে জিনিস না কিনে দেওয়ায় থানায় এসে মিথ্যা কথা বলে বাবা-মায়ের নামে নালিশ করতে আসছে। মেয়েটি জিনিস না পেয়ে হয়ত আঘাত পেয়েছে। তবে, তার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে আসবে এটা ভাবা যায়না। মেয়েটির মা অবশ্য ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, আজকালকার ছেলে-মেয়ে। সবই তো বুঝছেন। কখন যে কি করে বসে তা বোঝার সাধ্য কার?

Exit mobile version