গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নির্দেশ না মানায় বর্ধমান পুরসভার অফিসের চেয়ার, টেবিল, আলমারি ও কম্পিউটার ক্রোক করার জন্য নির্দেশ দিল আদালত। নির্দেশ কার্যকর করে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বর্ধমানের দ্বিতীয় সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন আদালতের বিচারক। নির্দেশ অমান্য করার জন্য পুরসভার চেয়ারম্যানকে সিভিল জেলে পোরার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন আবেদনকারীর আইনজীবী। তাতে অবশ্য সায় দেননি বিচারক। আবেদনকারীর আইনজীবী অয়ন কুমার বলেন, পুরসভা আদালতের নির্দেশ মানেনি। একটি বাড়ির পৃথক হোল্ডিং নম্বর মালিকের নামে করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু, তা করেনি পুরসভা। সে কারণে নির্দেশ কার্যকর করতে আদালতে আবেদন জানানো হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৈদ্যনাথ সর উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির একের পাঁচ অংশের মালিক হন। তার দুই ভাই, বোন ও মা বাকি অংশের মালিক হন। সম্পত্তি পৃথক করার জন্য তারা আদালতে আবেদন জানান। আদালতের নির্দেশে সম্পত্তি ভাগ হয়। সম্পত্তি ভাগ হওয়ার পর পুরসভায় মিউটেশন করান তারা। ৩টি পৃথক হোল্ডিং নম্বর দেওয়ার জন্য পুরসভায় আবেদন করেন তারা। তা মঞ্জুর করে পুর কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী তারা ট্যাক্সও জমা দেন। কিন্তু, পরবর্তীকালে হোল্ডিং নম্বর আলাদা করাকে মান্যতা দেয়নি পুরসভা। তিনটি হোল্ডিং নম্বরকে এক করে দেয় পুরসভা। তারপর পুরসভার তরফে ৫ জনকে বকেয়া ট্যাক্স বাবদ ৩৪ হাজার ৮৬৫ টাকা ৫০ পয়সা মেটানোর চিঠি দেওয়া হয়। তা হাতে পেয়ে বৈদ্যনাথবাবু আইনজীবীর নোটিশ পাঠান। তার হোল্ডিং নম্বরকে পৃথক করার জন্য দাবি জানান তিনি। তাতে কর্ণপাত না করায় তিনি আদালতে মামলা করেন। আবেদনকারী ও পুরসভার আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারক হোল্ডিং নম্বর পৃথক করার জন্য নির্দেশ দেন। আবেদনকারীর নামে তা নথিভূক্ত করার জন্য পুরসভাকে নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও তারপর ৭ বছর কেটে গিয়েছে। সেই নির্দেশ কার্যকর করেনি পুরসভা। নির্দেশ কার্যকর করতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন বৈদ্যনাথবাবু। তার আইনজীবীর বক্তব্য শুনে পুরসভার চেয়ার, টেবিল ও কম্পিউটার ক্রোক করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুরসভার আইনজীবী শোভন কুমার বলেন, রায়ে সন্তুষ্ট নই। এর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।