বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রদেশ তৃণমূল স্তরে যখন নতুন পুরোনো তৃণমূল নিয়ে আকচা-আকচি চলছে সেই সময় রবিবার বর্ধমানের গোদার একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে নজিরবিহীন ভাবেই সিংহভাগ পুরোনো তৃণমূল কর্মীদের একত্রিত করার উদ্যোগ নিল পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য নুরুল হাসান। আর এরপরেই শুরু হয়েছে নতুন করে চর্চা। এদিন এই বিয়েবাড়িতে বর্ধমান উত্তর বিধানসভার অধীন বর্ধমান ১ ও ২ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস ও অবিভক্ত বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পুরোনো ও প্রতিষ্ঠাতা কর্মী ও নেতৃত্বদের নিয়ে মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। এখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা মেয়র পরিষদের সদস্য, জয়হিন্দ বাহিনীর রাজ্য কমিটির সদস্য কয়েকজনও। উপস্থিত ছিলেন নতুন তৃণমূল কিছু নেতাও। আর এই মেলায় দেখা মিলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার সময় থেকে তারও কিছুদিন পর্যন্ত যাঁরা সিপিএমের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই চালিয়েছেন তাঁরা হাজির। বর্তমান সময়ে এই সমস্ত নেতাদের অধিকাংশকেই কোনো মিটিং মিছিলে ডাকা হয়না। ফলে অনেকেই কার্যত বসে গিয়েছিলেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে। এদিন দফায় দফায় তাঁরা বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁদের সেই ক্ষোভ, অভিমানকে তুলে ধরেছেন। একইসঙ্গে এদিন তাঁদের সসম্মানে যেভাবে ডেকে এনে একত্রিত করা হয়েছে তা নিয়েও এদিন তাঁরা খুশী প্রকাশ করেছেন। এই মিলন মেলার আয়োজক নুরুল হাসান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন যাঁরা পুরোনো, যাঁরা বসে রয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনতে হবে। বিতর্ক তুঙ্গে তুলেই নুরুল জানিয়েছেন, কে কি করল বা করল না তা নিয়ে তাঁরা মাথা ঘামাচ্ছেন না। যেহেতু তাঁরা তৃণমূলের সৈনিক। তাই এই দায়িত্ব তাঁদেরও। আর সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এদিন বর্ধমান ১ ও ২ ব্লকের পুরোনো কর্মীদের তিনি মিলন মেলায় সমবেত করেছেন। তাঁরা নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। তাঁরা আলোচনা করেছেন কীভাবে আগামী লোকসভা ভোটে ৪২ টি আসনেই তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করা যায়। নুরুল জানিয়েছেন, এদিন এই মিলন মেলায় দি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি গঠিত হয়। জেলা কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে নুরুল হাসানকে। এছাড়াও এই মিলন মেলায় সহযোগী হিসেবে ছিল বঙ্গীয় সংখ্যালঘু মঞ্চের পূর্ব বর্ধমান ১ ব্লক কমিটি। নুরুল জানিয়েছেন, এবার থেকে তাঁরা এই দুটি সংগঠনের মাধ্যমে তৃণমূলের হাত শক্ত করার কাজ করবেন। বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের পক্ষ থেকে এদিন চন্দ্রনাথ মুখার্জী ঘোষণা করেছেন, রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেও এখনও বর্ধমান স্টেশনের ওপরে ফুটব্রিজ তৈরি করেনি। ফলে দুপাড়ের মানুষ চরম সমস্যায় রয়েছেন। দি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের পক্ষ থেকে এই ফুটব্রিজ করার দাবিতে তাঁরা লাগাতার আন্দোলনে নামছেন। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মূল সংগঠন সহ শাখা সংগঠনগুলি লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, সেই সময় পুরোনো তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে এই দুই সংগঠন সমান্তরালভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেওয়ায় রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে উঠেছে।