E Purba Bardhaman

তাঁর হারের পিছনে দলের অন্তর্ঘাত, সাংগঠনিক দুর্বলতাই দায়ী – দিলীপ ঘোষ

Party sabotage and organizational weakness are responsible for his defeat in the Lok Sabha elections - Dilip Ghosh

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- তাঁর হারের পিছনে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ছাড়াও দলীয় অন্তর্ঘাতকেই দায়ী করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ বর্ধমান শহরে সদস্যতা অভিযানে আসেন। বর্ধমানের কার্জন গেটে এসে গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁর হারের কারণ নিয়ে পর্যালোচনায় কি পাওয়া গেল সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, হারের কিছু পর্যালোচনা হয়েছে, কিছু পর্যালোচনা চলছে। হারের কারণ অনেক কিছু ছিল। তার মধ্যে অন্যতম তাঁদের পার্টির দুর্বলতা ছিল। অনেক কর্মীরা ভয়ের মধ্যে ছিলেন, ভিতরে ভিতরে তাঁরা চুপ করেছিলেন, তাঁদেরকে ভয় দেখানো হয়েছিল। যাদের ভয় দেখানো হয়েছিল তাঁরা আগে কিছু বলেননি, এখন বলছেন। কেউ কেউ দলে থাকলেও টাকার বিনিময়ে অন্তর্ঘাত চালিয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যাপারও ছিল। সবমিলিয়ে যেটা কেউ কল্পনা করতে পারেনি সেই রকম হার হয়েছে। এদিন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় দিলীপবাবু বলেন, কলকাতায় বোমা পাওয়া যাচ্ছে, বন্দুক পাওয়া যাচ্ছে, গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যাচ্ছে কিছুই হয় না। পুলিশ নেই, পুলিশ কাটমানি তুলতে ব্যস্ত। তাহলে আর কী হবে। বর্তমানে ট্যাবের টাকা যেমন অন্যজনের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে, তেমনই একজনের চাকরি চলে যাচ্ছে অন্যজনের কাছে। গরীব ছাত্রদের টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের পাওনা টাকা মেরে দেওয়ার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গতেই ঘটে। রাজ্যের যত দান খয়রাতের প্রকল্প আছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে কেন্দ্রের সুযোগ সুবিধা সব কিছুই তৃণমূলের নেতা ও ক্যাডারদের পোষার জন্যই ব্যবহার হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা এভাবেই লুট হচ্ছে। তৃণমূলে উপরের নেতারা কোটি কোটি নিচ্ছে, নিচের নেতারা নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এই নেতারা জানে তাদের গায়ে কেউ হাত দিতে পারবে না, কারণ তাদের হাতেই তো রয়েচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। অন্যদিকে, অর্জুন সি- এর খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কে কখন খুন হয়ে যাবে কেউ জানে না। ওর ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। যে ভাবে ভাটপাড়ায় প্রত্যেকদিন বোম, বন্দুক চলছে সব দায় ওর উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সরকারটা কি করতে আছে আমরা বুঝতে পারছি না।
এদিন সদস্যপদ অভিযানে এসে বর্ধমানের বিসি রোডের বিভিন্ন দোকানে ঢুকে দোকানদারদের মোবাইলে সদস্য পথ গ্রহণ করান দিলীপবাবু। সদস্য পথ গ্রহণের পর বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে যান পুজো দিতে। পুজো দিয়ে সাধারণ মানুষদের ভোগ খাওয়ান তিনি।
সম্প্রতি দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিজেপি নেতা শ্যামল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, শ্যামল বিজেপিতে ফিরবে। উল্লেখ্য, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বিজেপি বহিষ্কার করেছিল প্রাক্তন বিজেপি নেতা শ্যামল রায়কে। তিনি দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভায় দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হন। বহিষ্কৃত ওই নেতাকে গত লোকসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে প্রচারেও দেখা গিয়েছিল। কিছুদিন আগে শ্যামল বর্ধমানের বিধায়ক খোকন দাসের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। যদিও এদিন শ্যামল রায়কে নিয়ে দিলীপবাবুর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে খোদ শ্যামল রায় জানিয়েছেন, দিলীপবাবু যোগ্য নেতা। তাঁর সঙ্গেই এতদিন বিজেপি করেছেন। কিন্তু বিজেপির বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে দিলীপবাবু বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলেই আসবেন। আর তাঁরাও দিলীপবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন।

Exit mobile version