E Purba Bardhaman

এনআরসি আতংকে আধারকার্ড সংশোধনের জন্য দিনরাত জেগে ব্যাঙ্কের সামনে লাইন

People have lined up since yesterday to correction Aadhaar cards. At SBI Galsi Branch

গলসী (পূর্ব বর্ধমান):- ডিজিট্যাল ইণ্ডিয়ার লক্ষ্যে যখন দেশ তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে তখনও আধারকার্ড সংশোধনের জন্য দিনভর লাইন নয়, একেবারে আগের দিন সকাল থেকে পরের গোটা অফিসিয়াল কাজের দিন পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের গলসী থানার বিভিন্ন গ্রামের শয়ে শয়ে মানুষকে। একইসঙ্গে এনআরসির আতংক ক্রমশই গ্রাস করছে সাধারণ মানুষকে। কার্যত, বাংলায় এনআরসি নিয়ে এখনই কোনো আতংকের কারণ না থাকলেও এবং এব্যাপারে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হলেও সেই আতংকমুক্ত হতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। তাই ডিজিট্যাল রেশন কার্ডই হোক অথবা আধার কার্ডের সাধারণ সংশোধনের বিষয়ই হোক – জায়গায় জায়গায় চলছে লম্বা লাইন। আর তারই মাঝে রবিবার রাতে গলসীর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের সামনে থাকা সাধারণ মানুষ রীতিমত আধার কার্ড সংশোধনের জন্য দিন-রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে রইলেন।

গলসীর মুশিদপুর গ্রামের বাসিন্দা লুনিয়া পারভিন জানি্য়েছেন, গলসীর এই ব্যাঙ্কে প্রতিদিন ৩০টি করে আধার কার্ড নতুন করে করা কিংবা সংশোধনের কাজ করা হচ্ছে। শনিবার তাঁরা অফিসের সময়েই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কিন্তু ৩০জনের পরে দাঁড়ানোয় তাদের কাজ হয়নি। তাই আর বাড়ি ফিরে না গিয়ে ব্যাঙ্কের সামনেই গোটা পরিবার নিয়ে রয়েছেন। যাতে পরের দিন লাইনের প্রথমেই থাকা যায়। তিনি জানিয়েছেন, এনআরসি-র ভয় রয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, সরকারের উচিত এব্যাপারে গ্রামে গ্রামে কাউণ্টার খোলা। আর তা না করাতেই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের। শুধু তিনিই নন, শিড়রাই পশ্চিম পাড়া থেকে আসা সেখ লিয়াকত আলি, সেখ নূর সেলিম প্রমুখরা জানিয়েছেন, একটা আধার কার্ডের সংশোধন কিংবা নতুন একটা কার্ড তৈরী করতে তাঁদের দিনরাত জেগে ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে চলে আসতে হয়েছে। রবিবার রাতে ব্যাঙ্কের দরজার সামনে মশারি টাঙিয়ে রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। তাঁরাও জানিয়েছেন, সরকার বলছে এনআরসি নিয়ে ভয় নেই। এই রাজ্যে এনআরসি হবে না। তবুও ভয় যাচ্ছে না তাদের মন থেকে। তাই কাগজপত্র সব তৈরী রাখছেন তাঁরা। একইসঙ্গে তাঁরা আবেদন করেছেন, এভাবে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে না ফেলে যদি বিশেষ শিবির করে কিংবা প্রতিটি গ্রামে গ্রামে স্কুলে স্কুলে এই ধরণের শিবির করা হয় – তাহলে সাধারণ মানুষের ভাল হয়।

ফটো সৌজন্যে – ArinDam Hazra ( https://www.facebook.com/ArindamHz )

Exit mobile version