বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কয়েক দশকের দাবী এবার মেটার সম্ভাবনা দেখা দিল পূর্ব বর্ধমান জেলাবাসীর। কয়েকদশক ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে একটি ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরীর জন্য দাবী জানিয়ে আসছিলেন বর্ধমা্ন জেলার ক্রীড়ামোদি মহল। কিন্তু বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তৈরী হয়নি কোনো ইণ্ডোর স্টেডিয়াম। এমনকি জেলার মহকুমাগুলিতেও যে স্টেডিয়াম রয়েছে সেগুলিও কার্যত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমশই ভেঙে পড়তে চলেছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে কালনা ও কাটোয়া মহকুমায় একটি করে স্টেডিয়াম রয়েছে। রয়েছে বর্ধমান শহরের বুকেও দুটি স্টেডিয়াম। কিন্তু তা সত্ত্বেও একাধিক খেলার প্রচার ও প্রসার ঘটাতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় একটি ইণ্ডোর স্টেডিয়ামের দাবী জানিয়ে আসছিলেন বর্ধমানের ক্রীড়ামোদি মহল। বাম আমলে তত্কালীন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর কাছেও দফায় দফায় এই আবেদন জানানো হয়েছিল। এমনকি বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সের ভলিবলের একটি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে এসে সুভাষবাবু সূর্যসাক্ষী করে ঘোষণাও করেছিলেন বর্ধমানে তিনি একটি ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরী করবেনই। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই বর্ধমানের ক্রীড়ামহল তাঁর কাছে একটি ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরীর জন্য দাবী জানিয়ে আসছেন। বস্তুত, কয়েক দশক পার হয়ে গেলেও বর্ধমানে ইণ্ডোর স্টেডিয়ামের বিষয়টি কোনোভাবেই গুরুত্ব পায়নি। এমনকি খোদ রাজ্যের পালাবদলের পর ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের কাছেও সেই একই দাবী জানানো হয়। তিনিও এব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারপরও এব্যাপারে কোনো উদ্যোগই চোখে পড়েনি। দীর্ঘ কয়েকদশক ধরে জেলাবাসীর এই আবেদনের পর অতি সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ক্রীড়া দপ্তরের পক্ষ থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের কাছে ক্রীড়ার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি পরিকল্পনা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ওই নির্দেশিকা আসার পর তাঁরা সবকটি স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসকদের রিপোর্ট দিতে বলেছেন। এর মধ্যে কাটোয়া স্টেডিয়ামের সংস্কারের বিষয়টিও রয়েছে। এরই পাশাপাশি বর্ধমান শহরের গোলাপবাগ মোড়ের কাছে সরকারী পোলট্রি খামার লাগোয়া জমিতে একটি ইণ্ডোর স্টেডিয়াম করার জন্য তাঁরা পরিকল্পনা তৈরী করছেন। ইতিমধ্যেই জায়গার মাপজোপ করার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ত দপ্তরকে গোটা জায়গার নকশা এবং ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরীর জন্য বলা হয়েছে। অন্যদিকে, ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরীর এই বিষয়ে এগিয়ে এসেছেন খোদ বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মমতাজ সংঘমিতাও। তিনিও সাংসদ কোটায় অর্থ বরাদ্দ করার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, পূ্র্ত দপ্তর প্রকল্প তৈরী করার পর তা রাজ্য সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী মিটিয়ে ইণ্ডোর স্টেডিয়াম তৈরীর কাজ শুরু হতে চলেছে।