E Purba Bardhaman

বদলে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার খোলনলচে , রাস্তা সম্প্রসারণে চিন্তার ভাঁজ

 

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গ্রামীণ পাকা রাস্তা তৈরী নিয়ে কি আগামী দিনে কোনো সংকট আসতে চলেছে গোটা রাজ্যে? এমন আশংকা কিন্তু উড়িয়ে দিতে পারছেন না জেলা প্রশাসনের কর্তা থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও। সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা – ২ চালু করেছেন। আর এই প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা -১কে বাতিল করে গ্রামীণ সড়ক যোজনা -২ চালু করায় বদলে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার খোলনলচে। প্রায় ১০ বছর আগে গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলিকে পাকাপোক্ত করার জন্য উদ্যোগ নেয় তত্কালীন কেন্দ্র সরকার। নাম দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা -১। ১০ বছর পর বদলে যাচ্ছে এই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার খোলনলচেটাই। চালু হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা বা পিএমজিএসওয়াই -১-র পরিবর্তে পিএমজিএসওয়াই-২। আর নতুন এই প্রকল্পের বিষয় নিয়েই মঙ্গলবার বিস্তারিত আলোচনা হল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে। হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব সহ সমস্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরাও। বৈঠক শেষে সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, প্রায় ১০ বছর আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা -১ এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ রাস্তাকে পাকা করার কাজ শুরু হয়। এরপর অতি সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের পরিবর্তন এঘটানো হয়েছে। পিএমজিএসআরওয়াই-১এর বদলে চালু হচ্ছে পিএমজিএসওয়াই- ২ প্রকল্প। এই প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-১এর খাতে যে সমস্ত রাস্তাগুলি তৈরী হয়েছে সেগুলিকেও যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন যে সমস্ত রাস্তা এই প্রকল্পে তৈরী হবে তাও এই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-২ এর অধীনেই তৈরী হবে। কার্যত প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-১ কে বাতিল করে তার জায়গা নিল প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা- ২। সভাধিপতি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা -১-এ রাস্তাগুলি তৈরী হয়েছিল ৩.৫ মিটার চওড়া করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা – ২এ সেই রাস্তাগুলিকেই (নতুন সহ) প্রায় ৭ মিটারের বেশি চওড়া করে তৈরী করা হবে। অর্থাত প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা -১-তে যে রাস্তা ছিল ১২ ফুট চওড়া প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-২ সেই রাস্তা চওড়া হবে মোট ১৭ ফুট চওড়া। তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা না হয় এদিনের বৈঠকে বিডিও এবং জনপ্রতিনিধিদের তা দেখতে বলা হয়েছে। সভাধিপতি জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কের মত অন্যান্য রাস্তার ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ করা হলে জমিদাতা তার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ পান। কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে জমিদাতাকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। কার্যত স্বেচ্ছায় জমি দিতে হয় জমিদাতাকে। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, নয়া এই প্রকল্প খাতে কৃষক থেকে সাধারণ মানুষ কিভাবে এবং কতটা স্বেচ্ছায় জমি দেবেন? এমনকি এমন বহু গ্রাম রয়েছে যেখানে এই প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা -১ প্রকল্পে রাস্তা তৈরী করার সময় বহু মানুষের ঘরবাড়ি একেবারে রাস্তার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে বর্তমানে। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা – ২ চালু হলে নিয়ামানুসারে রাস্তার দুপাশেই রাস্তা চওড়া হবে। ফলে অনেক বাড়িই সেক্ষেত্রে ভাঙা পড়বে। কিন্তু প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী তাঁরা কোনো ক্ষতিপূরণই পাবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই পরি্স্থিতির মোকাবিলা কিভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই। সভাধিপতি জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন এব‌্যাপারে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে মানুষকে বোঝানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Exit mobile version