কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের
admin
গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-লোকসভা ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা রুজুকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য দুই বর্ধমান জেলা জুড়ে। গত সোমবার দুপুরে সোস্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় জানিয়েছিলেন, ”যাঁকে মানুষ ‘পিসির ভাইপো‘ বলে জানেন, তিনি যাবেন বলে দুঘণ্টা আগে থেকে পুলিশ ও সিভিক ভলেণ্টিয়ার জাতীয় সড়কের দুধারে (শক্তিগড়ে) দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করছে। পড়বি তো পর আমার সামনে। দড়ি খুলে দিয়েছি বন্ধুগণ সময় এলে …”। আর বাবুল সুপ্রিয়র এই ট্যুইট করার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শক্তিগড় থানায় বাবুল সুপ্রিয়ের বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক মামলা দায়ের হল শক্তিগড় থানায়। অভিযোগকারী সিভিক ভলান্টিয়ার শ্যামল মণ্ডল ও মেমারি থানার কলানবগ্রামের বাসিন্দা তন্ময় ঘোষ দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে অপরাধে উৎসাহিত করা, সরকারি আদেশ অমান্য করা, মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক কাজ করা এবং কুৎসা করার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শক্তিগড় থানার এক অফিসার জানিয়েছেন, দু’টি পৃথক অভিযোগ জমা পড়েছে। তার ভিত্তিতে দু’টি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও বাবুল সুপ্রিয়ের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার ভিত্তিতে আসানসোলে মামলা রুজু হয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে বাবুল সুপ্রিয়ের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিজেপির বর্ধমান জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছে্ন,মামলার ধরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং পুলিশ ভয় পাচ্ছে বিজেপিকে। তাই মিথ্যা কুত্সার আশ্রয় নিয়েছে তারা। উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বাঁকুড়ায় নির্বাচনী সভা ছিল। অভিষেকবাবু জেট প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। বেলা ১১টা ১৫ নাগাদ তিনি কালীঘাটের বাড়ি থেকে বের হন। তাঁর নিরাপত্তার জন্য ২নং জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। যথারীতি শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কে দড়ি ধরে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা। সেই সময় কলকাতা থেকে সড়ক পথে আসানসোলে যাচ্ছিলেন বাবুল। রাস্তার দু’পাশে দড়ি দিয়ে যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দেখতে পেয়ে গাড়ি থামান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পুলিশের কাছে যান নিয়ন্ত্রণের কারণ জানতে চান। জাতীয় সড়ক ধরে ভিআইপির যাওয়ার কথা রয়েছে বলে তাঁকে জানায় পুলিশ। অভিযোগ এটা শোনার পরই বাবুল সুপ্রিয় ব্যারিকেড সরানোর নির্দেশ দেন। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁর বচসাও হয়। এই ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করেন বাবুল।
অন্যদিকে, শক্তিগড় থানা সূত্রে জানা গেছে, কলানবগ্রামের বাসিন্দা অভিযোগকারী তন্ময় ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি শক্তিগড় এলাকায় একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে আরও কয়েকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় আসানসোলের সংসদ সদস্য বাবুল সুপ্রিয় গাড়ি করে কিছু ছেলেকে নিয়ে দোকানটির সামনে দাঁড়ান। দলের লোকজনকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট মারার নির্দেশ দেন। এমনকি কিছু হলে তিনি বুঝে নেবেন বলে দলের কর্মীদের আশ্বাস দেন। অভিষেক ও তৃণমূল কংগ্রেসের নামে গালিগালাজ করেন তিনি। কর্তব্যরত এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে চমকান তিনি। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছ থেকে দড়ি খুলে দেন। এমনকি নিরাপত্তাজনিত নির্দেশ না মানার জন্য প্ররোচিত করেন তিনি। একই ধরণের অভিযোগ করেছেন সিভিক ভলান্টিয়ার শ্যামল মণ্ডলও। অভিযোগ দুটির ভিত্তিতে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে আইপিসি ১১৬, ১৮৮, ৩৩৬, ৫০০ এবং ৫০৪ ধারায় পুলিশ মামলা শুরু করেছে। এই ঘটনাকে ঘিরেই এবার লোকসভা ভোটের মুখে পারদ চড়তে শুরু করেছে। সম্প্রতি লোকসভার থিম সং নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে নোটিশ ধরিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর তারই মাঝে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এই দেখুন, মাননীয় অভিষেক ব্যানার্জী, অর্থাৎ যাঁকে মানুষ ‘পিসির ভাইপো’ বলে জানেন, তিনি যাবেন বলে দুঘন্টা আগে থেকে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার জাতীয় সড়কের দুধারে (শক্তিগড়ে)দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করছে😡পড়বি তো পর আমার সামনে😀দড়ি খুলে দিয়েছি বন্ধুগণ•সময় এলে প___ pic.twitter.com/SU3DWDuocl
— Chowkidar Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) March 18, 2019