বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নাবালিকা পাচারের একটি চক্রের হদিশ পেয়েছে ভাতার থানার পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে নাবালিকাদের নাচতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ভিন রাজ্যে পাচার করে চক্রটি। চক্রের সঙ্গে জড়িত দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম টুম্পা বেগম ও চাদনি বেগম। প্রথমজনের বাড়ি ভাতার থানার বিজয়পুর পলসোনায়। অপরজনের বাড়ি বর্ধমান থানার লোকো খালাসিপাড়ায়। নাবালিকা পাচারের কথা ধৃতরা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে এবং পাচার হওয়া বেশকিছু নাবালিকাকে উদ্ধারের জন্য ধৃতদের ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ধৃতদের ৭ দিন পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা।
পুলিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ টুম্পা ও চাদনি ভাতার থানার ঝুঝকোডাঙায় এক ব্যক্তির বাড়িতে আসে। ওই ব্যক্তির নাতনিকে ভিন রাজ্যে কাজে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তারা। কিন্তু, তাদের সঙ্গে যেতে রাজি হয়নি নাতনি। সে দিদিমার সঙ্গে থাকে। তার বাবা-মা পৃথক থাকেন। টুম্পা ও চাদনিকে ওই বাড়িতে ঢুকতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। তারা বাড়িতে এসে টুম্পা ও চাদনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। চাপের মুখে ভেঙে পড়ে ওই ব্যক্তির নাতনিকে ভিন রাজ্যে নাচের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নেয় তারা। নাবালিকার দিদিমার সঙ্গে আলোচনা করেই সবকিছু হচ্ছিল বলে জানতে পারেন এলাকাবাসী। এরপরই টুম্পা ও চাদনিকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের থানায় ধরে নিয়ে আসে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সামসুল ঘটনার বিষয়ে ভাতার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, তারা এর আগেও বেশ কয়েকজন নাবালিকাকে নাচের জন্য ভিন রাজ্যে নিয়ে গিয়েছে। তারা সেখানেই রয়েছে। মোটা টাকার বিনিময়ে তারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে নাবালিকাদের সংগ্রহ করে ভিন রাজ্যে পাচার করে বলে জেনেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া নাবালিকাকে হোমে রাখার জন্য আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। তাকে বর্ধমান শহরের ঢলদিঘি এলাকায় সরকারি হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম। নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নথিভূক্ত করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।