E Purba Bardhaman

বর্ধমানে পরপর ব্যবসায়ীদের হুমকি ফোন, বোমাবাজির ঘটনায় ধৃত ৩

Police have arrested three miscreants in connection with a bombing at a restaurant demanding money

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মাত্র ৪ দিনের মধ্যেই পরপর দুটি দোকানের ব্যবসায়ীকে ফোন করে লক্ষ লক্ষ টাকা দেবার জন্য ফোন করে হুঁশিয়ারী দেওয়ার পর একটি দোকানের সামনে আস্ত বোমা রাখা এবং অন্যটি একটি দোকানে সরাসরি বোমাবাজি করার ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করল ৩ দুষ্কৃতিকে। ধৃতদের নাম শেখ সাইদুল, শেখ রবি ও রাজেশ রায়। এদের মধ্যে শেখ সাইদুল ও শেখ রবির বাড়ি মেমারি থানার দেবীপুর এলাকায়। রাজেশ রায়ের বাড়ি বিহারের বেগুসরাই। জেলা পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতিদের ফোনের সূত্র ধরে তাদের টাওয়ার লোকেশন অনুসরণ করে রবিবার বর্ধমান থেকে তাদের ধরা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান, এই তিনজনের সঙ্গে আরও কয়েকজন থাকতে পারে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে তাজা ৩টি বোমা ছাড়াও নিষিদ্ধ তরল কোডাইন। সোমবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হবে। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের ৭দিন পুলিশী হেফাজতে নেবার আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। রবিবার পুলিশের হাতে ৩জন ধরা পড়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১৯ আগষ্ট বর্ধমান শহরের খাগড়াগড় এলাকায় একটি ইলেকট্রিকের দোকানের মালিককে ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। তাঁর দোকানের সামনে একটি তাজা বোমা রেখে দিয়ে ভয়ও দেখানো হয়। এরপর শুক্রবার রাতে বর্ধমান শহরের অপর একটি না্মী রেস্তোঁরায় রাত্রি প্রায় ১১টার সময় ১০ লক্ষ টাকা চেয়ে দোকানে একটি বোমা ছোঁড়া হয়। পরপর এই ঘটনায় ব্যবসায়ীক মহলে তীব্র আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পাল্টা পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারীও দেয়। এদিকে, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে বর্ধমান শহরে দুষ্কৃতিদের এই তাণ্ডবে রীতিমত চাপের মুখে পড়ে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুষ্কৃতিদের ধরার জন্য পুলিশের সমস্ত বিভাগকেই কাজে নামানো হয়। মুলত পুলিশের সাইবার ক্রাইমের সহযোগিতায় দুষ্কৃতিদের মোবাইল টাওয়ার ধরেই এদিন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে এই দলটির আরও কয়েকটি দোকানের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। দলের মূল পাণ্ডা রাজেশ রায় একাধিক ব্যাঙ্ক ডাকাতির সঙ্গেও যুক্ত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সম্প্রতি সে বর্ধমান সহ কয়েকটি জেলায় টিম তৈরীর কাজ করছিল। শেখ সাইদুলের নামে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন থানায় ৭-৮ টি কেস চলছে। তার মধ্যে ব্যাঙ্ক ডাকাতি, বোমাবাজির ঘটনাও রয়েছে। বিহারের রাজেশ রায়ের সঙ্গে সাইদুলের পরিচয় হয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতরে। সেখান থেকেই এরা অপারেশন করার ছক কষেছিল। কয়েক মাস আগেই জামিনে ছাড়া পেয়ে এরা মেমারি এলাকায় শেখ রবির সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপরই এভাবে টাকা রোজগারের পরিকল্পনা করে তারা। এদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এরই পাশাপাশি ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৬টি মোবাইল সিম নিয়েও তদন্ত করছে পুলিশ। কিভাবে অন্যের সিম এরা ব্যবহার করত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে অপরাধীদের ধরতে পারায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে জেলা পুলিশ।

Exit mobile version