গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মহিলা আইনজীবী খুন হওয়ার পর থেকে দু’জন গ্রামে থাকছিল না। একজন মাঝেমধ্যে এসে চলে যাচ্ছিল। এমনিতে তারা দেশি বা চোলাই মদ খেত। কিন্তু, কয়েকদিন ধরে তারা মদের ব্র্যান্ড পরিবর্তন করে। চোলাই ও দেশি মদ ছেড়ে দামি বিদেশি মদ খাচ্ছিল। পেমেন্ট করার সময় বড় নোট দিচ্ছিল। চোখে-মুখে চাপের লক্ষণ থাকলেও বাসিন্দাদের কাছে ফূির্ত ভাব দেখাচ্ছিল তারা। এতেই তাদের উপর সন্দেহ হয় পুলিসের। তাদের উপর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়। কয়েকদিনে এলাকার বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সম্পের্ক তথ্য সংগ্রহ করে পুলিস। আর তাতেই মহিলা আইনজীবীকে খুনে জড়িত সুজিত ঘোড়ুই ও প্রশান্ত ক্ষেত্রপালকে ধরা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পুলিসের।
বিভিন্ন সূত্রে পুলিস জানতে পারে, কয়েকদিন ধরে বিদেশি মদ খাচ্ছে প্রশান্ত ও সুজিত। এমনিতে তারা এলাকায় চুল্লুখোর হিসাবে পরিচিত। রোজগার তেমন বেশি নয়। তা সত্বেও কিভাবে তারা বিদেশি মদ খাচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় পুলিসের মধ্যে। ঘটনার পর থেকে প্রশান্ত এলাকা ছাড়েনি। কিন্তু, ঘটনার দিন তিনেক পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় সুজিত। এতে তার উপর সন্দেহ হয় পুলিসের। তাই, পুলিস প্রথমে প্রশান্তকে ডেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে সে খুনের কথা কবুল করে বলে পুলিসের দাবি। খুনে সুজিতের জড়িত থাকার কথা পুলিসকে জানায় সে। এরপর খণ্ডঘোষ থানার বোঁয়াইচণ্ডী গ্রামে মামারবাড়ি থেকে সুজিতকে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
তদন্তের শুরু থেকেই খুনি মিতালি দেবীর পরিচিত বলে মনে হয় পুলিসের। সুজিত মাঝেমধ্যেই গাছ থেকে ডাব পেড়ে দিতে মিতালি দেবীর বাড়িতে আসত। ধরা পড়ার পর ডাব পেড়ে দেওয়ার পারিশ্রমিক ঠিকমতো না দেওয়ার কারণে আইনজীবীর উপর তার রাগ হয় বলে পুলিসকে জানিয়েছে সুজিত। তা থেকেই সে বাড়িতে লুটপাটের মতলব আঁটে বলে জেনেছে পুলিস। তবে, তাদের মিতালি দেবীকে খুনের পরিকল্পনা ছিলনা বলেই অনুমান পুলিসের। চুরিতে বাধা দেওয়ার কারণেই তাঁকে মেরে ফেলা হয় বলে মনে করছে পুলিস। জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, মহিলা আইনজীবীর বাড়িতে সোনা, টাকা আছে বলে জানত সুজিত। আইনজীবীকে খুনের পর জাতীয় সড়কের পাশের একটি ধাবায় তারা মদও খায়। মদের ব্র্যান্ডও তারা পরিবর্তন করে। খুনের কিনারায় তা সাহায্য করেছে পুলিসকে।