E Purba Bardhaman

রায়নার দেরিয়াপুরে কলকাতার ত্রিপল ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় আদালতে চার্জশিট পেশ

Police have filed a chargesheet in connection with the murder of a Kolkata-based businessman at Deriapur village in Raina police station.

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রায়না থানার দেরিয়াপুরে কলকাতার ত্রিপল ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় শুক্রবার আদালতে চার্জশিট পেশ করল পুলিস। চার্জশিটে সোমনাথ মণ্ডল, মহম্মদ জানিসর আলম ওরফে রিকি, মহম্মদ সাদ্দাম, মহম্মদ জাভেদ আকতার, মহম্মদ মেহতাব আলম, সাহেব আলম, মহম্মদ সোহরাব আলি ও রিয়াজ আলমের নাম রয়েছে। ঘটনার মূল চক্রী হিসাবে মৃতের খুড়তুতো ভাই সোমনাথের নাম উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই সব্যসাচীকে খুন করা হয় বলে চার্জশিটে জানিয়েছে পুলিস। রিয়াজ অবশ্য এখনও ধরা পড়েনি। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার রাজেশ মাহাত। যদিও, প্রথম দফার চার্জশিটে এফআইআরে নাম থাকা সোমনাথের বাবা গৌরহরি মণ্ডল, মা পূির্ণমা মণ্ডল, দাদা দীনবন্ধু মণ্ডল, মৃতের বন্ধু রাজবীর সিং ও পার্থ সান্যালের নাম নেই। এফআইআরে অবশ্য মৃতের বাবা দেবকুমার মণ্ডল অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই, ভ্রাতৃবধূ ও দুই ভাইপো সুপারি কিলার লাগিয়ে পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে খুন করেছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সোমনাথের বাবা, মা ও দাদার জড়িত থাকার তেমন কোনও জোরালো তথ্য পায়নি পুলিস। সোমনাথের সঙ্গে জানিসরের ব্যবসায়িক সূত্রে পরিচয় ছিল। সব্যসাচীকে খুনে জানিসরকে সুপারি কিলার হিসাবে সে-ই নিয়োগ করে। জানিসর তার বন্ধুদের সব্যসাচীকে খুনে কাজে লাগায়। ১৭ পাতার চার্জশিটে কিভাবে সব্যসাচীকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় তা জানানো হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটির ব্যালেস্টিক রিপোের্টর কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে পুলিস। খুনিদের টি.আই. প্যারেডে শনাক্তকরণের কথাও চার্জশিটে জানানো হয়েছে। রায়না থানার ওসি পুলক মণ্ডল বলেন, তদন্ত এখনই শেষ হচ্ছেনা। প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হতে পারে। তদন্তে আরও কিছু তথ্য মিললে তা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে জানানো হবে।


চার্জশিটে পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার কয়েকমাস আগে সব্যসাচীর হাওড়ার সালকিয়ার বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। তার আগে থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছিল। বোমাবাজির ঘটনায় দীনবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পরই সোমনাথ খুড়তুতো দাদা সব্যসাচীকে খুনের পরিকল্পনা নেয়। পরিকল্পনা সফল করতে সে জানিসরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সব্যসাচীকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার টোপ দেওয়া হয়। খুনের জন্য ১৯ লক্ষ টাকা তাকে দেওয়া হয়। বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা ছিল। গত ২২ অক্টোবর দেরিয়াপুরের বাড়িতে খুন হন সব্যসাচী। খুনিদের কলকাতা থেকে দেরিয়াপুরের পথ সোমনাথই চিনিয়ে নিয়ে আসে। সোমনাথ বাইকে আসে। তার সঙ্গে এক বন্ধুও ছিল। তিনি আদালতে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন। সোমনাথ যে খুনিদের সঙ্গে দেরিয়াপুরে এসেছিল তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছে পুলিস। বাইকটিও বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

Exit mobile version