E Purba Bardhaman

আইনজীবী খুনে এক আইনজীবী-সহ বেশ কয়েকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিস

Lawyers have organized a protest meeting in Burdwan court over the murder of a lawyer. Representatives from the State Bar Council attended the protest meeting

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মহিলা আইনজীবী খুনে এক আইনজীবীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিস। শুক্রবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। অপর এক আইনজীবীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। বিকাল থেকে জামালপুর থানার অধীন আঝাপুর ক্যাম্পে এক আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হেড কোয়ার্টার) প্রিয়ব্রত রায়ের নেতৃত্বে একটি দল এদিন বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার মধ্যে ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে এমন একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। টানা জিজ্ঞাসাবাদে ওই আইনজীবীর কাছ থেকে বেশকিছু তথ্য পেয়েছে পুলিস। সন্ধ্যায় এলআইসির এক এজেন্টকেও পুলিস ক্যাম্পে ডেকে জেরা করে পুলিস। জেরায় বেশকিছু তথ্য উঠে এসেছে পুলিসের সামনে। মহিলা আইনজীবীর জীবনবিমার নমিনি তাঁর আত্মীয়রা কেউ নন। এক পরিচিত আইনজীবীর নাম রয়েছে নমিনি হিসাবে। এছাড়াও ব্যাংকের বিভিন্ন নথিতেও ওই আইনজীবীর নাম রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিস। টানা জেরার পর রাতে আঝাপুর ক্যাম্প থেকে ওই আইনজীবীকে জামালপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে থানা সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার ৬ দিন পরও মহিলা আইনজীবী মিতালি ঘোষকে খুনের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিসি তদন্ত। প্রথমে চুরির উদ্দেশ্যে আইনজীবীকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ করে পুলিস। বাড়ি থেকে সোনা উদ্ধারের পর তা থেকে অনেকটাই সরে আসেন তদন্তকারীরা। তবে, মহিলা আইনজীবীর হাত-পা বাঁধা নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মিতালি দেবীর হাত থেকে চুল মিলেছে। তা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। চুল পাওয়া থেকে পরিষ্কার, মৃত্যুর আগে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন মিতালি দেবী। তাঁর হাত সেই সময় খোলা ছিল। তাহলে, কি কারণে তাঁর হাত-পা বাঁধা হল তা এখনও রহস্য রয়ে গিয়েছে পুলিসের কাছে। মৃতদেহ পাচারের জন্য হাত-পা বাঁধা হয়েছিল কিনা তা ভাবাচ্ছে পুলিসকে। তবে, বাধা আটকাতে মাথায় আঘাতের পর মিতালি দেবী জ্ঞান হারানোর পর হাত-পা বাঁধা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিস।
বিভিন্ন সূত্রে পুলিস জেনেছে, বর্ধমান আদালতের এক আইনজীবীর সঙ্গে মিতালি দেবীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মাঝে মধ্যেই দু’জনের মধ্যে অশান্তিও হত। ঘনিষ্ঠ মহলে জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ওই আইনজীবী তাঁকে চাপ দিচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মিতালি দেবী। এছাড়াও তদন্তকারীরা জেনেছেন, ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা টাকার নমিনি রয়েছেন ওই আইনজীবী। গাড়ির কিস্তির টাকাও মেটাতেন তিনি। মহিলা আইনজীবীর ব্যক্তিগত জীবন সম্পের্কও খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিস। তাঁর সঙ্গে কাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। চুরি যাওয়া মোবাইলের সূত্র ধরেও তদন্ত চলছে। ঘটনার পিছনে প্রমোটার চক্রের হাত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। মহিলা আইনজীবীকে খুনে কাউকে ভাড়া করা হয়েছিল কিনা সে ব্যাপারেও খোঁজখবর চলছে। সেজন্য ক্রাইম রেকর্ড আছে এমন লোকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, তদন্তে অনেক কিছু উঠে আসছে। কাউকেই সন্দেহের তালিকার বাইরে রাখা হচ্ছেনা। খুব শীঘ্রই ঘটনার কিনারা হতে পারে।

Exit mobile version