বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নারী পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম রাজীব কুমার সিং, অভিষেক সিং ও মন্টু আনসারি। বিহারের ছাপড়ার বানিয়াপুরে রাজীবের বাড়ি। উত্তর প্রদেশের গুমটিনগরে বাড়ি অভিষেকের। উত্তর ২৪ পরগণার জগদ্দল থানার নৈহাটি মেঘরা মোড়ে মন্টুর বাড়ি। শুক্রবার বিকালে বর্ধমান শহরের বিজয়রাম কালীতলা এলাকা থেকে পুলিশ তাদের ধরে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। নারী পাচারে জড়িত থাকার কথা ধৃতরা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। তারা কয়েকজন মহিলাকে ভিন রাজ্যে পাচার করেছে বলে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন নারীপাচারে জড়িত বলে ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে। শনিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। পাচার হয়ে যাওয়া মহিলাদের উদ্ধারের জন্য এবং বাকি জড়িতদের হদিশ পেতে ধৃতদের ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতদের ৬ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে বর্ধমান শহরের বিজয়রামের কালীতলা এলাকার কুঁড়েপাড়ার এক গৃহবধূ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করেও পরিবারের লোকজন গৃহবধূর হদিশ পাননি। কিছুদিন আগে ফোন করে গৃহবধূ তার স্বামীকে জানান, তাকে বিহারে আটকে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় নাচার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাচারে জড়িত একজনের ফোন নম্বরও দেন গৃহবধূ। এরপর তার স্বামী বিষয়টি পুলিশকে জানান। যদিও অভিযোগ, গৃহবধূকে উদ্ধারে উৎসাহ দেখায়নি পুলিশ। এরপরই গৃহবধূর স্বামী স্ত্রীকে উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন। স্ত্রীর দেওয়া নম্বরে ফোন করে তিনি পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফাঁদে ফেলতে তার সন্ধানে আরও মেয়ে আছে বলে পাচারকারীদের জানান তিনি। নতুন শিকারের টোপ গিলে ফেলে পাচারকারীরা। মন্টু গৃহবধূর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার সঙ্গে বিহারের দু’জন আসবে বলে সে জানায়। মহিলাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য পাচারকারীদের বিজয়রাম এলাকায় আসতে বলেন গৃহবধূর স্বামী। সেইমতো শুক্রবার দুপুরে মহিলাদের নিতে মন্টু এবং অভিষেক ও রাজীব বিজয়রাম এলাকায় আসে। তাদের ধরে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন এলাকাবাসী। বিজয়রামের গৃহবধূর পাশাপাশি আরও কয়েকজন মহিলাকে বিহার ও উত্তর প্রদেশে পাচারের কথা তিনজন কবুল করে। এরপরই তাদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গৃহবধূর স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে কেস রুজু করে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।