E Purba Bardhaman

কর্মী তথা দাপুটে ছাত্রনেতা মুকেশ শর্মাকে অবশেষে শোকজ করলেন মেমারী কলেজের অধ্যক্ষ

মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- মেমারী কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মী তথা কলেজের দাপুটে তৃণমূলের নেতা মুকেশ শর্মাকে অবশেষে শোকজ করলেন মেমারী কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ ভট্টাচার্য। ২৬জুন তিনি মুকেশ শর্মাকে শোকজনের চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। আগামী ২ জুলাইয়ের মধ্যে মুকেশ শর্মাকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। খোদ মুকেশ শর্মা জানিয়েছেন, তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শোকজের জবাব দেবেন। তবে কি কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে চাননি। এমনকি কলেজ অধ্যক্ষও জানিয়েছেন, এটি কলেজের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এব্যাপারে তিনি কিছু বলবেন না। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলেজের অধ্যক্ষ সহ কলেজের অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ, তাঁদের হুমকি দেওয়া, কলেজে দাদাগিরি প্রভৃতি একাধিক অভিযোগ আনা হয় মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে। কলেজের পঠনপাঠনের কোনো পরিবেশ নেই, এমনকি তাঁদের নিরাপত্তার দাবী তুলে এব্যাপারে জেলা প্রশাসন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের স্মরণাপন্ন হন কলেজের অধ্যাপকরা। পরে মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে মেমারী থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তারী এড়াতে রীতিমত দাপুটে এই নেতা গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি বর্ধমান আদালতে তিনি গ্রেপ্তারী এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। প্রায় ২৫দিন কলেজে অনুপস্থিত থেকে জামিন পাবার পর তিনি কাজে যোগ দেন। এরপরই কলেজ অধ্যক্ষ ওই ২৫দিন কেন তিনি কলেজে আগাম কোনো কারণ না দেখিয়েই অনুপস্থিত ছিলেন তা জানতে শোকজ করেছেন। জানা গেছে, কলেজ অধ্যক্ষ শোকজের চিঠিতে সরাসরি উল্লেখও করেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর না দিলে মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে, জানা গেছে, কলেজের সামগ্রিক বাতাবরণকে অক্ষুণ্ণ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী। যেহেতু কলেজে কোনো পরিচালন সমিতি নেই তা বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলেকে কলেজের প্রশাসক নিয়োগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, কলেজে কোনো ছাত্র সংসদের কমিটি না থাকায় এবং বর্তমানে ভর্তি প্রক্রিয়া চলতে থাকায় কলেজ অধ্যক্ষ ছাত্রসংসদের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এই সময়ে বহিরাগতরা এসে যাতে কোনো অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, শুধু মেমারী কলেজই নয়, বর্ধমান জেলার একাধিক কলেজে তৃণমূল নেতাদের দাদাগিরী, ভর্তির জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। শনিবার এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, বর্ধমান রাজ কলেজ, বিবেকানন্দ কলেজ, শ্যামসুন্দর কলেজ, হাটগোবিন্দপুর কলেজ, গলসী কলেজ সহ একাধিক কলেজে তৃণমূলের নেতারা কলেজের বাইরে বসে রয়েছেন। কলেজে ভর্তির জন্য তারা সরাসরি টাকা দাবী করছেন। মেধার পরিবর্তে অর্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়েও রীতিমত অস্বচ্ছতা ধরা পড়ছে।

Exit mobile version