E Purba Bardhaman

দুর্ঘটনারোধে জাতীয় সড়কের ফাঁক পূরণ করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে এল পুলিশ

Protests against blocking the illegal cutting of dividers on National Highway 2. Work stopped due to protests by local residents. At Mirchoba & Ram Mudi Colony, Burdwan Town

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান শহরের মীরছোবা এলাকায় ২ নং জাতীয় সড়কের ডিভাইডারের ফাঁক দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াত করা এবং দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঘটনা রুখতে ডিভাইডারের ফাঁক পূরণ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বাধায় ফিরে এল পুলিশ। এই ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় বর্ধমান শহরের ১৬ ও ১৩ নং ওয়ার্ডে। জানা গেছে২নং জাতীয় সড়ক তথা বর্ধমানের এই বাইপাশ রোড তৈরীর সময় বিশেষ করে রাস্তার এক ধারে থাকা ১৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাঁদের অসুবিধার বিষয় তুলে সেই সময় এনএইচ কর্তৃপক্ষকে এই ১৬নং ওয়ার্ড থেকে ১৩নং ওয়ার্ডে যাবার জন্য রাস্তার ডিভাইডারে ফাঁক রাখার আবেদন এবং একইসঙ্গে চাপও দেন। অবরোধ করা হয় রাস্তাও। বাধ্য হয়েই এবং অন্যায় জেনেও এনএইচ কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের চাপে প্রায় ১৫ ফুট চওড়া একটি ফাঁক রেখে দেন। যা দিয়েই ১৬নং ওয়ার্ড তথা মীরছোবারামমুদি কলোনীসম্প্রতি গড়ে ওঠা ক্যানেলপুল জনবসতি এলাকার প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ এই পথ দিয়েই যাতায়াত করতে থাকেন। এমনকি ১৬নং ওয়ার্ডের রামমুদি কলোনী এবং মীরছোবা এলাকার মানুষকে স্কুলকলেজ থেকে যে কোনো রকম কাজেই এই রাস্তা পেড়িয়েই আসতে হয়। সাম্প্রতিক কালে ২নং জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা রোধে একাধিক জায়গাকে বিপদসংকুল এলাকা হিসাবে চিহ্নিতও করা হয়। ২নং জাতীয় সড়কের এই দুর্ঘটনা রোধে তাই হুগলী বর্ধমানের সীমানা বসিকপুর থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসী পর্যন্ত যে সমস্ত জায়গায় (প্রায় অবৈধভাবেই ১৩টি জায়গায় সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য এই সমস্ত ডিভাইডারের ফাঁক রয়েছে সেগুলি পূরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই উদ্যোগেই শনিবার যথারীতি পুলিশের পক্ষ থেকে মীরছোবা এলাকার এই ফাঁক ঢালাই করে পূরণ করার কাজ শুরুও হয়। কিন্তু খবর পেয়েই এলাকার কয়েকশো মানুষ প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা রীতিমত কাজে বাধা দেন। এই সময় পুলিশের সঙ্গে মৃদু ধস্তাধস্তিও হয় এলাকাবাসীর। এমনকি এই সময় স্থানীয় এক গ্যারেজ মালিক পুলিশের পক্ষ নিয়ে ওই পথ বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল করলে উত্তেজিত জনতা ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন ওই গ্যারেজ মালিকের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি পীঠটান দেন। এদিকেএদিন পুলিশের সঙ্গে রীতিমত বচসা এবং এই কাজে বাধা দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কয়েকঘণ্টা ধরে টানাপোড়েন চলতে থাকে। এলাকাবাসী বাসন্তী মণ্ডলসেখ জাহাঙ্গীর রহমান প্রমুখরা জানিয়েছেনএই বাইপাশ তৈরীর সময়ই তাঁরা এখানে একটি আণ্ডারপাশের আবেদন করেছিলেন। বর্তমানে এই এলাকার মানুষকে প্রায় অর্ধেক কিমি পথ ঘুরে হয় তেলিপুকুরে আণ্ডারপাশ দিয়ে অথবা প্রায় ১ কিমি দূরে বেচারহাট এলাকায় ক্রশিং দিয়ে যেতে হয়। ফলে অনেকেই ঘুরপথে না গিয়ে সহজ পথ হিসাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ডিভাইডারের ফাঁকা পথকেই ব্যবহার করেন। এর ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনাও ঘটে। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর এলাকার মানুষ যৌথভাবে একটি দাবী জানান এনএইচ কর্তৃপক্ষকে। যাকে অনুমোদন করেন ১৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার আল্পনা হালদারও। তিনিও সাংসদ এবং বিধায়ককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবারও আবেদন জানান। কিন্তু তারপরেও কোনো আণ্ডারপাশ বা ফুটব্রীজ তৈরী হয়নি। সম্প্রতি এনএইচ কর্তৃপক্ষ ২নং জাতীয় সড়ককে ফোর লেন থেকে সিক্সথ লেনে তৈরীর কাজে হাত লাগিয়েছে। ফলে এভাবে রাস্তার মাঝ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াতকে দ্রুত বন্ধ করার জন্য উঠেপড়ে নেমেছেন তাঁরা। এদিকেশনিবার সকাল থেকে এলাকাবাসীদের এই প্রবল বাধা ও বিক্ষোভের জেরে রীতিমত পিছিয়ে আসতে হয় পুলিশকে। রাস্তার ডিভাইডারের ফাঁক পূরণ না করেই তাঁরা ফিরে যান।

Exit mobile version