বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের অধীনে একাধিক রেলগেটে যেখানে যানচলাচল অত্যন্ত বেশী, সেই সমস্ত জায়গায় রেলওয়ে আন্ডার ব্রিজ (আন্ডারপাস) তৈরি করা হচ্ছে বলে শনিবার বর্ধমানে এসে জানিয়ে গেলেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, লেভেল ক্রসিং গেট অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার কারণ। পূর্ব রেল সেই সমস্ত জায়গায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল আন্ডার পাস তৈরি করার। কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ২১-২২ টা তৈরি হয়ে গেছে। বর্ধমান স্টেশনের ওপর দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ফুট ওভারব্রিজও তৈরি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের আন্ডারপাস তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ওপর জমির জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন হচ্ছে না। রেল নিজের জায়গাতেই এটা করতে পারছে। এর ফলে রেলের যাত্রাপথেও যেমন বাধা থাকবে না, তেমনি সাধারণ মানুষেরও উপকার হবে। তিনি জানিয়েছেন, মোটামুটি উচ্চতার গাড়ি এই আন্ডারপাস দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে এমনভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। এদিন বর্ধমানের মেমারি, মশাগ্রামে আরওবি সম্পর্কে কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী রেল রেলের পজিশনে কাজ করে। আর জমি পেলেও রেল করে। অ্যাপ্রোচ রোড না হলে হবে না। সেখানে কেউ বসবাস করলে সমস্যা। সব কিছু খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, এদিন হাওড়া ডিভিশনের এডিআরএম সৌরিশ মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে কৌশিকবাবু বর্ধমানে আসেন সাংবাদিক বৈঠক করতে। রেলের চালকদের জন্য রেল যে রানিং রুমে একাধিক স্টার হোটেলের মত সুবিধা চালু করেছে তা এদিন সাংবাদিকদের দেখানো হয়।
সম্প্রতি রেল দুর্ঘটনার পর রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি চালকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিভিন্ন জায়গার আলোচনায় উঠে আসে চালকের শূন্যপদ-সহ সঠিক বিশ্রাম না পাওয়ার বিষয়টিও। আর এরপরই রেল দপ্তর বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে মাঠে নামে। রেল দপ্তর ক্তথেকে তুলে ধরা শুরু হয় রেল নিয়ম মেনে শূন্যপদ পূরণ করে চলছে এবং চালকদের বিশ্রাম-সহ স্বাচ্ছন্দেরও ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। শনিবার এই বিষয়টিই সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরতে বর্ধমানে আসেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র এবং হাওড়া বিভাগের এডিআরএম (ওপি) সৌরিশ মুখোপাধ্যায়। কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, তাঁরা বেশকিছু দিন ধরে দেখছেন বিভিন্ন জায়গায় মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলছে যে রেলওয়েতে চালকের প্রচুর শূন্যপদ রয়েছে। এই শূন্যপদ রেল বিভাগ পূরণ করছে না। আর চালকদেরও ঠিকমতো যত্ন নেওয়া হচ্ছে না। সেই বিষয়টা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাতেই এদিন তাঁরা এসেছেন। কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, সমস্ত কর্মী ৬০ বছর বয়সে অবসর নেন। অন্যান্য বিভাগের মত রেল দপ্তরেও প্রতিমাসেই অনেকেই অবসর নেন। তারমধ্যে অনেকেই চালক এবং গার্ডও থাকেন। শূন্যপদ পূরণ যেমন হয়, তেমনি অবসরও হয়। অবসরের পরে রিক্রুটমেন্টের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শূন্যপদ পূরণ করা হয়। এবছর অগস্ট মাসে পূর্ব রেলে চালকদের রিক্রুটমেন্ট হবে পদোন্নতির ভিত্তিতে। ১২৬০ জনকে পদোন্নতির ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের চালক পদে (অ্যাসিসটেন্ট লোকো পাইলট) উত্তীর্ণ করা হবে। এছাড়া সর্বভারতীয়স্তরে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে ‘স্বচ্ছভাবে’ সেপ্টেম্বর মাসে সিলেকশন প্রক্রিয়া করা হবে। এক্ষেত্রে সারা ভারতের রেলে প্রায় আঠারো হাজার শূন্যপদ পূরণ করা হবে।