গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রেলে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের এক ল’ক্লার্কের ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় রেলের এক কর্মীর নাম জড়িয়েছে। ঘটনার কথা মেমারি থানায় জানানো হয়। কিন্তু, থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। এসপিকে জানানোর পরও সুরাহা না হওয়ায় প্রতারিত বর্ধমান সিজেএম আদালতে মামলা করেছেন। কেস রুজু করে তদন্তের জন্য মেমারি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রতারিতের আইনজীবী বিধান চন্দ্র সামন্ত বলেন, রেলে চাকরি দেওয়ার নামে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে। এই ঘটনাটি পুলিসকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু, থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত কেস রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মেমারি থানার এক অফিসার বলেন, ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা ঠিক নয়। এধরণের অভিযোগ জানাতে থানায় কেউ আসেনি। আদালতের নির্দেশ মেনে কেস রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিস জনিয়েছে, মেমারি থানার বৈদ্যডাঙার বাসিন্দা তপন কুমার সরকার কলকাতা হাইকোর্টের ল’ক্লার্ক। তাঁর সঙ্গে মেমারি থানার ধানুই গ্রামের এক রেল কর্মীর পরিচয় হয়। তপনবাবু তাঁর এক আত্মীয়ের চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করছিলেন। ওই রেল কর্মী নিজেকে উচ্চ পদস্থ অফিসার বলে জানায়। তপনবাবুকে তাঁর আত্মীয়ের রেলে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে চাকরির জন্য ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান তিনি। তাঁর সঙ্গে দপ্তরের উচ্চ পদস্থ অফিসারদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান ওই রেল কর্মী। তিনি অনেকের রেলে চাকরি করে দিয়েছেন বলে জানান। তপনবাবু আত্মীয়ের চাকরির জন্য তাঁকে নগদে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দেন। এছাড়াও ১ লক্ষ টাকার দু’টি কিষাণ বিকাশ পত্রের সার্টিফিকেট দেন তিনি। টাকা দেওয়ার পর বেশ কিছুদিন কেটে যায়। কিন্তু, তপনবাবুর আত্মীয়ের চাকরি হয় না। এনিয়ে জানতে গেলে ওই রেল কর্মী বলেন, প্রসেসিং চলছে। খুব শীঘ্রই রেলে অনেক লোক নেবে। তখন আপনার আত্মীয়ের চাকরি হবে। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। চাকরি না হওয়ায় তপনবাবু টাকা ও সার্টিফিকেট ফেরত চান। কিন্তু নানা অছিলায় তাঁকে এড়িয়ে চলে ওই রেলকর্মী। কিছুদিন আগে তপনবাবু তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে রেল কর্মীর বাড়িতে গিয়ে টাকা ও সার্টিফিকেট ফেরত চান। গালি গালাজ করে তাঁদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন ওই রেলকর্মী। এমনকি তাঁদের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। ওই রেলকর্মীর সঙ্গে মেমারি থানারই আদর্শ পল্লির এক বাসিন্দার যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তপনবাবুর। তাঁরা দু’জনে মিলে প্রতারণায় জড়িত বলে আদালতে জানিয়েছেন তিনি।