নিজস্ব প্রতিবেদন, রায়না (পূর্ব বর্ধমান) :- দুরন্ত গতিতে মোটর বাইক চালানোকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে চাপা অসন্তোষ ছিল রায়নার ছোট কয়রাপুর গ্রামে। আর তার জেরেই শনিবার রাতে ঈদের দিন বোমার আঘাতে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম আনিসুর রহমান (২২)। বাড়ি জ্যোত্সাদি ছোটকয়রাপুরের দেওয়ানপাড়ায়। পেশায় রং মিস্ত্রি আনিসুর বাড়ির ছোট ছেলে। মুর্শিদাবাদে সে রংয়ের কাজ করত। গত১২ জুন সে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি আসে। আগামী মঙ্গলবার তার মুর্শিদাবাদে কাজে ফিরে যাবার কথা ছিল। আনিসুরের বাবা আব্দুস সালাম মল্লিক জানিয়েছেন, তার দুই ছেলে এবং তাদের পরিবারের কেউ কোনো রাজনীতি করেন না। শনিবার সন্ধ্যায় মা আমিনা বেগমের জন্য ওষুধ আনতে বের হয় আনিসুর। বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দুরেই মল্লিকবাজারে একটি চায়ের দোকানের কাছে যাবার সময় আচমকা পরপর ৪ টি বোমা ছোঁড়ে দুষ্কৃতিরা। একটি বোমা সরাসরি লাগে আনিসুরের মাথায়। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার মাথা। গোটা ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী, র্যাফ হাজির হয় গ্রামে। শনিবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত মোট১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শৌভনিক মুখোপাধ্যায়। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। রায়নার তৃণমুল কংগ্রেসের বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই জানিয়েছেন, দুষ্কৃতিদের ছোঁড়া বোমায় এক নিরীহ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। দোষীরা শাস্তি পাক। অন্যদিকে, গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামের রাস্তা দিয়ে জোড়ে বাইক চালানো নিয়ে শনিবার জ্যোত্সাদির তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে একটি মীমাংসা বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠক চলাকালীনই এই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বাম আমলে লাগাতার সংঘর্ষে খবরের শিরোনামে উঠে আসে রায়নার এই জ্যোতসাদি, বাঁধগাছার নাম। সকাল থেকে রাত বোমার আওয়াজেই ঘুম ভাঙত এলাকার মানুষের। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, তৃণমুল ক্ষমতায় আসার পর কিছুদিন এলাকা শান্ত থাকলেও ফের দুষ্কৃতিরা মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে। যার খেসারত দিতে হল আনিসুরকে।