বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- চলতি আর্থিক বছরে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ক্রেতা আদালতে প্রায় ১২০টি মামলা থাকলেও মামলাকারীদের কোনো হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না প্রায় ৭০টি মামলায়। আর এই ঘটনায় নড়চড়ে বসল জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এই ধরণের মামলাকারীদের হদিশ পেতে অথবা তাঁদের বিরুদ্ধে কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনাও শুরু করে দিল জেলা প্রশাসন। সোমবার ষান্মাসিক কনজিউমার্স এফেয়ার্স সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাজির ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রবীর চট্টোপাধ্যায়, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন ছাড়াও ক্রেতা সুরক্ষা সংক্রান্ত দপ্তরের আধিকারিকরাও। এদিন এই দপ্তরের সারা বছরের বিগত ৬ মাসের কাজের মূল্যায়ন করা হয়। ক্রেতা সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারী পদক্ষেপের প্রশংসা মিলেছে এদিনের সভায়। জনসচেতনতা গড়তে ট্যাবলো, এলাকাগত বৈঠকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার বেশি কাজ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলায় মাত্র ৩০টি স্কুলে কনজিউমার্স ক্লাব গঠন করায় এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, সব থেকে তাঁদের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিযোগকারীদের নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে মোট ১২০টি মামলা বিচারাধীন ছিল। তার মধ্যে প্রায় ৩০টি মামলার নিষ্পত্তি হলেও প্রায় ৭০টি মামলার অভিযোগকারীদেরই কোনো হদিশ মিলছে না। এব্যাপারে তাঁরা চিন্তাভাবনা করছেন। অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও তাঁরা ভাবনা চিন্তা করছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী কাউকে দোষারোপ করার জন্যই এই ধরণের অভিযোগ করছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেহেতু তাঁরা মামলাকারী মামলা করার পর আর আসছেন না তাই এব্যাপারে মামলার পাহাড় জমছে। সেজন্যই তাঁরা মামলাকারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ বা অহেতুক ব্যতিব্যস্ত করার জন্যই অভিযোগ করে থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইছেন। অন্যদিকে, জানা গেছে, গতবছরও যেখানে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যে সমস্ত মামলা হয়েছিল তার মধ্যে সিংহভাগই ছিল গ্যাস সরবরাহ সংক্রান্ত। কিন্তু এবছর সেই সংখ্যা অনেক কম। পরিবর্তে এখনও পর্যন্ত যে ১২০টি মামলা রয়েছে তার মধ্যে দেখা গেছে প্রায় ৪৫টি মামলাই বিদ্যুত বিল বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে। উল্লেখ্য, এদিনের বৈঠকে আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রাইস মিলে ধান কেনার ক্ষেত্রে মাপে কারচুপির অভিযোগ। যাঁরা বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ভাঙাচোরা জিনিস কেনেন বা কাগজ কেনেন তাঁরাও নানাভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছেন বলে এদিন বৈঠকে অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, এই বিষয়গুলি নিয়েও তাঁরা নতুনভাবে ব্যবস্থা নিতে চলেছেন।