E Purba Bardhaman

চলছে অবৈধভাবে ওভারলোডিং বালি পাচার, নষ্ট হচ্ছে রাস্তা-সেতু, প্রতিবাদে লরী আটকে বিক্ষোভ

Road and Bridge conditions are getting worse due to Illegally overloading sand trafficking. Local people protested by stopping the truck. At Raipur village, Lowa Ramgopalpur Gram Panchayat, Galsi 1 Block

বিপুন ভট্টাচার্য, গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- কয়েকমাস আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফর তথা জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে রীতিমত সরব হয়েছিলেন অবৈধ বালিকয়লা পাথর প্রভৃতি পাচার নিয়ে। বালির ওভারলোডিং বন্ধের জন্য জেলার প্রতিটি অফিসারকে রীতিমত কড়া হুঁশিয়ারীও দিয়েছিলেন। ফলাফলস্বরূপ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই রীতিমত কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেও পড়েছিলেন জেলা প্রশাসন থেকে পুলিশ কর্তারাও। থানায় থানায় সাজো সাজো রব পড়েও গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এবং পুলিশ ও প্রশাসন কর্তাদের নজরদারীতে রীতিমত সরকারী কোষাগারে আশাতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিথিল হয়ে গেছে সেই নজরদারী। ফের দামোদর থেকে ব্যাপকভাবেই চলছে অবৈধভাবে বালির ওভারলোডিং। আর সেই ওভারলোডিংএর জেরে রীতিমত বেহাল হয়ে পড়েছে রাস্তা থেকে রাস্তার ওপরে থাকা ব্রীজও। আর তাতেই প্রমাদ গুণছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসী থানার লোয়ারামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুরকসবা সহ আশপাশের প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ। ওভারলোডিং এই বালি পাচারের জন্য এলাকার প্রায় এক লক্ষ একর কৃষি জমির ভবিষ্যত নিয়েও আতংকিত হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। কারণ অতিরিক্ত বালি বোঝাইয়ের ফলে রায়পুর এলাকায় কসবারায়পুর প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা খারাপের পাশাপাশি এই রাস্তার ওপর থাকা ব্রিটিশ আমলের একটি দ্বিতল ব্রীজও সংকটের মুখে। ক্রমশই ভাঙছে ব্রীজ। ফলে যেকোনো মুহূর্তে ব্রীজ ধ্বসে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীরা। আর তা হলে গোটা এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। আর ওভারলোডিং বালি পাচারের জন্য রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে ওঠায় এবার বালির লরী আটকে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বর্ধমানের গলসী থানার লোয়ারামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুরে কসবা থেকে রায়পুর রাস্তায় এদিন সকাল থেকেই বিক্ষোভে নামেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বদরুদ্দোজা মণ্ডল জানিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার এই রাস্তার ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করেই বালিঘাট থেকে ওভারলোডিং বালি বোঝাই লরী যাতায়াত করায় গোটা রাস্তাই ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেছেনগড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লরীর বালি এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রাস্তা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। এমনকি এই রাস্তার ওপরই রয়েছে ব্রিটিশ আমলের বহু পুরনো বেশ কয়েকটি সেতু। সেগুলিরও অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। কোনোকারণে সেতু ভেঙ্গে গেল রীতিমত আশপাশের কমবেশি প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। এদিকেএদিন বালির ওভারলোডিংএর বিষয়টি স্বীকার করেছেন খোদ লরীর চালকরা। লরী চালক সেখ ইরফান জানিয়েছেনসরকার নির্ধারিত ২২০ সিএফটির বদলে তাঁরা ৪০০ সিএফটি বালি নিয়ে যাচ্ছেন। বালিঘাটের মালিককে বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এব্যাপারে লোয়ারামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রিজওয়ান সেখ গ্রামবাসীদের এই অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেনএই রাস্তা এবং ব্রীজটি মেরামত করার জন্য তাঁরা বহুবার জেলা প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখনও পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি।

Exit mobile version