E Purba Bardhaman

নবীন প্রবীণ বুঝি না, আমি বুঝি আসল আর নকল তৃণমূল – সায়নী

Saayoni Ghosh present at the protest meeting organized by Trinamool Youth Congress in Burdwan

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- তৃণমূল কংগ্রেসে নবীন প্রবীণ নিয়ে আকচা-আকচি যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলছেই সেই সময় বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে প্রতিবাদ আন্দোলনে অংশ নিতে এসে রাজ্য যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ সরাসরি জানিয়ে গেলেন তিনি নবীন-প্রবীণ কিছু বোঝেন না। বোঝেন আসল তৃণমূল আর নকল তৃণমূল। এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা না দেওয়া-সহ জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি রাসবিহারী হালদারের ডাকে বর্ধমানের উল্লাস থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন তৃণমূল যুব রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। মিছিলে পা মেলান রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এবং একাধিক বিধায়ক-সহ জেলার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। রীতিমতো জনস্রোত সৃষ্টি হয় এই প্রতিবাদ মিছিলে। এদিন কার্জন গেটের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সায়নী বলেন, আমি বুঝি আসল তৃণমূল নকল তৃণমূল। নবীন-প্রবীণ বুঝি না। নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সমালোচনা করে সায়নী বলেন, উনি মন কি বাত করবেন ১০০ এপিসোড হবে, কিন্তু কাম কি বাত হবে না। কাম কি বাত করবেন মমতা। বিজেপি বাঙালি বিদ্বেষী, নারী বিদ্বেষী। ভারতীয় জুমলা পার্টি। ইলেকশনের সময় আসে। অন্য সময় কোথাও নেই। কেন্দ্রের কালা আইনের বিরুদ্ধে ড্রাইভাররা আন্দোলনে নেমেছে। সায়নী বলেন, বাংলায় ৩৫ নয় বিজেপি সাড়ে তিনটে সিটও পাবে না। তিনি বলেন, আমরা কি ভিখারি? বাংলার মানুষ কি ভিখারি? কেন প্রাপ্য টাকা বারবার চাইতে হবে। লজ্জা লাগা দরকার এরকম প্রধানমন্ত্রীর। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া যাবে না। বুথের নেতা থেকে জেলা সভাপতি প্রত্যেকের কাঁধেই দায়িত্ব রয়েছে। খেলা হবে, বুথ আঁকড়ে পড়ে থাকতে হবে। চলতি সময়ে নবীন প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রদেশ নেতাদের বাকবিতণ্ডার প্রসঙ্গ সরাসরি না এনেও সায়নী বলে যান – কোনো কথায় কান দেবেন না। তৃণমূলে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। বক্তব্য রাখতে গিয়ে এদিন সায়নী কার্জন গেটকে দেখিয়ে দাবি করেন, এই গেট ছিল না ১১ বছর আগে। শতাব্দী প্রাচীন হেরিটেজ এই কার্জন গেটকে তৃণমূল আমলে করার এই দাবিকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্কও। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন সায়নী বলেন, আমি তো অত্যন্ত নবীন, এখানে অনেক নবীন রয়েছে। তার সাথে অনেক প্রবীণ রয়েছেন। সবাই একসাথে বসে রয়েছেন। আমি নবীন প্রবীণ কিছু জানি না, আমি আসল আর নকল চিনি। নকলকে চিহ্নিত করার কাজ যারা মাঠে রয়েছেন তাঁরা ঠিকসময় নিজেদের মত করে নেবেন। তৃণমূল নতুন নয়, পুরোনো দল। আমরা শত্রু কে সেটাও জানি, মিত্র কে সেটাও জানি। রামমন্দির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তো বারবারই বলছি আমরা ধর্মের রাজনীতি করিনা। যাদের কর্ম নেই, যাদের উন্নয়ন নেই, যাদের মানুষকে দেওয়ার কিছু নেই তাঁরা ধার্মিক উন্মাদনা সৃষ্টি করে ভোটের রাজনীতি করতে চায়। তৃণমূল কংগ্রেস উন্নয়ন করতে চায়। আমাদের মনের মধ্যে ঈশ্বর আছে, তাঁকে নিয়ে আমাদের রাজনীতি করতে হয় না। আমরা মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই। নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেল প্রকাশ বিষয়ক বিচারকের নির্দেশ প্রসঙ্গে সায়নী বলেন, ঠিক আছে ভালো। আমরা সবসময় চাই যারা ন্যায্য, যাদের পাওনা, যারা দাবিদার, তাঁরা সবসময় নিজেদের ভাগ পাবে। সেটা আমরা চাই। আমরা আজকে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার জন্য লড়াই করছি। যারা যোগ্য চাকরিপ্রার্থী তাঁরা নিজেদের জন্য লড়াই করছে। এবং সেই লড়াইকে সমর্থন করছি। লোকসভা ভোটের আগে সিএএ চালুর বিষয়ে এদিন সায়নী বলেন, এই ধাপ্পাবাজিটা দিয়ে আর কতদিন চলবে। চালু হচ্ছে, হচ্ছে না সেটা বাংলার মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। চার বছরের উপর একটা আইন নিয়ে এসেছে, কিন্তু লাগু করার ক্ষমতা নেই। চালু করতে হলে করুক। স্বচ্ছতা রাখতে হবে, মানুষকে বলতে হবে। আর হবে কি হবেনা সেটা আপনারা ভোটের আগে দেখতে পাবেন। গল্পের গরু গাছে উঠে গেছে।

Exit mobile version