কালনা (পূর্ব বর্ধমান) :- শনিবার ভারতীয় সময় ভোর তিনটে নাগাদ এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল জয় করলেন বাংলার মেয়ে সায়নী দাস। ৩৪ কিমি দীর্ঘ, গড়ে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের হিমশীতল জলস্রোত আর ভয়ঙ্কর জেলিফিশের আক্রমণ সামলে নর্দান আয়ারল্যান্ড থেকে স্কটল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত নর্থ চ্যানেল জয় করতে সায়নীর সময় লাগল ১৩ ঘন্টা ২২ মিনিট ৩৮ সেকেণ্ড।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার বারুইপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাঁতারু সায়নীর কথায়, ‘কিছুটা সাঁতরানোর পর উল্টো স্রোত এতটাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে দীর্ঘক্ষণ এক জায়গাতেই কাটাতে হয়েছে। সেইসঙ্গে জেলিফিশের সাঙ্ঘাতিক উপদ্রব।’ এতকিছুর পরও শেষমেশ ‘পঞ্চম সিন্ধু’ জয় করে ইতিহাসে নাম তুলে অভিভূত সায়নী। অসাধ্য সাধনের পর সায়নী নর্থ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে তাঁর ছায়াসঙ্গী বাবা তথা প্রশিক্ষক রাধেশ্যাম দাস ও সকল শুভানুধ্যায়ীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে সায়নীর আকুল প্রার্থনা, ‘আর দুটো চ্যানেল জিতে যেন পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি।’ নর্থ প্রণালী জয়ের পর চ্যানেল অবজারভার পাম এলা দক্ষতার সঙ্গে সায়নীর শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ফিরিয়ে আনেন। নর্থ আয়ারল্যান্ড থেকে পাঠানো প্রতিক্রিয়াতে শনিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ সায়নী জানিয়েছেন, ভারতের প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে এই চ্যানেল জয় করার কৃতিত্ব তাঁরই প্রথম। একই সাথে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম কোন মহিলা পাঁচটি চ্যানেল পেরানোর রেকর্ড তাঁর মুকুটে সংযোজিত হলো।
আয়ারল্যান্ড থেকে সায়নীর মা রূপালি দাস জানান, ‘আবহাওয়া খুবই প্রতিকূল হওয়ায় সায়নীর নর্থ চ্যানেলে নামা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ হল। এবার ঘরে ফেরার পালা।’
সায়নীর সামনে বাকি আর দুটো চ্যানেল জয়। সুগারু ও জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করতে পারলে তার মুকুটে উঠবে “ওশেন সেভেন” মুকুট। আপাতত ‘সপ্তসিন্ধু’ জয়ের সেই স্বপ্নেই মগ্ন সায়নী।