প্যারা মেডিক্যাল ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্যারা মেডিক্যালের ফাইনাল ইয়ারের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ালো শক্তিগড়ের বাম এলাকায়। গতকাল রাতে বাম এলাকার ভাড়া বাড়ির রুম থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রশিক্ষণরত বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও ডিউটি ম্যানেজমেন্ট ইনচার্জের কুপ্রস্তাবের জেরে ছাত্রী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ইতোমধ্যেই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডিউটি ম্যানেজমেন্ট ইনচার্জের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার বাবা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে শক্তিগড় থানার পুলিশ। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত বছর ১৯-এর ওই ছাত্রীর বাড়ি বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতে। প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করার পর ‘ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ল্যাবরেটরি টেকনোলজি’-র (DMLT) ট্রেনিং নেওয়ার জন্য শক্তিগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আসেন তিনি। গত ১ বছর ৪ মাস ধরেই সে ওই হাসপাতালে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। যাতায়াতের অসুবিধার জন্য হাসপাতালের পিছনেই একটি বাড়িও ভাড়া নেয় সে। সেখানে তাঁর সঙ্গে আরও ১ জন ছাত্রী থাকত। পরিবারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ই হাসপাতালের তরফে তার উপর মানসিক চাপ তৈরি করা হত। অতিরিক্ত ডিউটি করানো হত। সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালে ডিউটি ম্যানেজমেন্ট অফিসার তাঁকে নানান কুপ্রস্তাব দিতো বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এর জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ছাত্রী। একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। এমতাবস্থায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবার। যদিও পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের অপারেশনাল ম্যানেজার অভিষেক ব্যানার্জী জানিয়েছেন, একটা ঘটনা ঘটেছে। ওই ছাত্রীকে ভালো মেয়ে হিসেবে জানতাম। পুলিশ তদন্ত করছে। আশাকরি পুলিশি তদন্তেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। অন্যদিকে, মৃতার বাবা জানিয়েছেন, আমার মেয়ে ১ বছর ৪ মাস এখানে ছিল। গতকাল একজন রুমমেট ফোন করে জানায় গলায় ফাঁসের ঘটনা। আমরা এসে দেখলাম দরজার ছিটকেনি লাগানো ছিল না। তাঁর মেয়েকে বেশিরভাগ সময় হাসপাতালের কর্ণধার চিকিৎসক তাঁর খোসবাগানের চেম্বারে নিয়ে যেতেন, টানা ৮ ঘণ্টা করে ডিউটি করাতেন। মানসিক চাপ দেওয়া হতো। হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজমেন্ট অফিসারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। তিনি বদমেজাজি, মানসিক চাপ সৃষ্টি করতেন। তাঁকে যৌন হেনস্তার করারও চেষ্টা করা হয়েছে। মৃতার বাবা জানিয়েছেন, সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে বলে শুনেছি, আমরা দেখিনি। সুইসাইড নোট ও মোবাইল পুলিশ নিয়ে গেছে। তাঁরা সঠিক তদন্ত চাইছেন বলে জানিয়েছেন।