বৃষ্টি থামলেও রেহাই নেই, পূর্ব বর্ধমানের একাধিক এলাকা প্লাবিত
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বৃষ্টি কমলেও রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সেচ খালের জল উপচে প্লাবিত হয়েছে বিঘার পর বিঘে জমি। মেমারি থানার জাবুইয়ে বর্ধমান-কালনা রোডের উপর দিয়ে বইছে জল। ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। রাস্তার উপর দিয়ে জল বয়ে যাওয়ায় বড় গাড়ি যেতে পারলেও অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে ছোট গাড়িগুলি। ফলে ছোট গাড়িগুলি ঘুরপথে জাবুই থেকে কন্দর্পপুর হয়ে যাওয়া শুরু করলে স্থানীয়রা সেই রাস্তা অবরোধ করেন। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার অবস্থা বেহাল, প্রশাসনকে বলে কোন সুরাহা হয়নি, তার ওপর গ্রামের রাস্তা দিয়ে গাড়িগুলি যাতায়াতের ফলে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তা মেরামতের দাবিতে বাধ্য হয়ে তাঁরা অবরোধ করেছেন। পরে মেমারি ২ ব্লকের বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয়রা। এদিকে বিঘার পর বিঘে জমি জলের তলায় তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা। অন্যদিকে, কুনুর নদী ছাপিয়ে গিয়ে প্লাবিত হল গুসকরা শহরের একাংশ। বিশেষ করে গুসকরা পৌরসভার ১ এবং ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা প্রায় সম্পূর্ণ প্লাবিত। ঘর ছেড়ে মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন। যতটা পারছেন ঘর থেকে মালপত্র সরানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। গুসকরা শহরের কয়েকশো পরিবার একপ্রকার গৃহহীন হয়ে গেছেন প্লাবনের জেরে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কুনুর নদীর জল বাড়তে থাকে। হু হু করে জল ঢুকতে থাকে ঘরে। তখন অধিকাংশ পরিবার ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর নিমেষের মধ্যে ঘরের মধ্যে হাঁটু সমান কোথাও কোমর সমান জল জমে যায়। শনিবার সকাল থেকে আরও জল বাড়তে থাকে। গুসকরার কমলনগর, দোনাইপুর, কোন্নগর, কাটাটিকুরি, ধরমপুর, দিঘে কেলেটি, সোঁয়ারা প্রভৃতি এলাকার এখন ভয়ঙ্কর চেহারা। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে কেউ আশ্রয় খুঁজতে যাচ্ছেন আত্মীয়বাড়ি, কেউ যাচ্ছেন ত্রাণশিবিরে। শুক্রবার মাঝরাত থেকেই শুরু হয়েছে প্রাণরক্ষার লড়াই। গুসকরা পুরসভা থেকে দুর্গতদের জন্য ত্রাণসামগ্রী ও ত্রিপল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে পৌরসভার ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা কমবেশি প্লাবিত হয়ে গেছে। স্থানীয়দের দাবি, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কারণে রাতারাতি কুনুর নদীর জলস্তর বেড়ে গেছে। তাই এই পরিস্থিতি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, কাটোয়া এবং আউশগ্রাম ও গুসকরায় ইতোমধ্যেই ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। সমগ্র পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।