E Purba Bardhaman

টেট পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বেড়িয়েই বিক্ষোভ পরীক্ষার্থীদের

Several candidates protested after leaving the examination center after taking the TET exam

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- টেট পরীক্ষা দিয়ে বেড়িয়েই নিয়োগের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখালেন পরীক্ষার্থীরা। রবিবার বর্ধমান শহরের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুলে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন পরীক্ষা হল থেকে বেড়িয়েই পরীক্ষার্থীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। প্লাকার্ডে লেখা ছিল- মিথ্যে প্রতিশ্রুতি মানছি না, অবিলম্বে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চাই। ২০২৩ নতুন টেটের আগে, ২০২২ প্রাথমিক টেট পাশেদের অবিলম্বে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চাই। নিয়োগ ছাড়া শুধু টেট, ভরছে নাকো খালি পেট। উল্লেখ্য, ২০২৩-এর এই টেট পরীক্ষাতেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে এদিন সরব হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। এদিন কুসুমগ্রাম থেকে আসা আসজাদ আলি সেখ রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২২ সালে টেট পাস করেছেন। কিন্তু তারপরেও ২০২৩-এ তিনি পরীক্ষা দিলেন। ভাল পরীক্ষা হয়েছে। এরপরেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৩০০ টাকা দিনমজুরিতে তিনি একটি দোকানে কাজ করেন। এদিন পরীক্ষা দিতে এসে একদিনের মজুরী থেকে বঞ্চিত হলেন তিনি। একইসঙ্গে ৫০০ টাকা খরচ করে এই পরীক্ষা দিতে হয়েছে। সেহারাবাজার থেকে আসা অভীক পান বলেন, বছর বছর সরকার টেট নিতে পারছে, তার জন্য খরচ করতে পারছে, অথচ টেট পাশ করার পর চাকরীর কোনো নির্দেশ নেই। ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে। একটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। টেটে চাকরী আটকাতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকার মামলা লড়তে পারছে অথচ টেট পাশদের চাকরী দিতে পারছে না। তিনি জানিয়েছেন, এবারে প্রায় ৩ লাখ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। এদিন সোস্যাল মিডিয়ায় টেট পরীক্ষার একটি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করা এবং প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সম্পর্কে অভীক পান জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি পর্ষদ ও সরকারের দেখা উচিত। কিভাবে এই প্রশ্ন ফাঁস হল। জানিয়েছেন, তাঁরা যে পরীক্ষা দিয়েছেন সেই প্রশ্নের সঙ্গে মিল রয়েছে এই ফাঁস প্রশ্নের। একইকথা বলেছেন বাপ্পাদিত্য দে। পরীক্ষার্থী বরুণ ঘোষ জানিয়েছেন, ২০১৭ সালেও তিনি টেট পাশ করেছেন। ২০২২ সালেও তিনি টেট পাশ করেছেন। কিন্তু সরকারের কোনো সদিচ্ছা নেই। তাই নানান বাহানায় টেট পাশদের এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, “রবিবার টেট পরীক্ষা খুব সুন্দরভাবে হয়েছে। যাঁরা এই পরীক্ষা-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।” এদিন জেলার ৩২ টি কেন্দ্রে ১২৭৩৯ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন। পরীক্ষার্থীরাও মনে করেন, কেন্দ্রের ভিতর সুষ্ঠুভাবেই পরীক্ষা হয়েছে।
তবে সমাজমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পরে। তা নিয়ে পর্ষদের সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করেন পরীক্ষার্থীরা। জেলা প্রাথমিক পর্ষদ সূত্রে জানা গেছে, যে পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের ভিতরে ঢুকতে হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া সহজ নয়। সংসদ সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। তবে ১১টার মধ্যেই কেন্দ্রে অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে হয়েছে। সে কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির সামনে সকাল ১০টা থেকে ছিল ভিড়। মোবাইল বা বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ নিষেধ ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ছিল ১৪৪ ধারা। পরীক্ষাকেন্দ্র ও তার বাইরে পুলিশের ব্যবস্থা ছিল।

Exit mobile version