মঙ্গলকোট (পূর্ব বর্ধমান) :- সম্পত্তির লোভে বাবাকে পিটিয়ে খুন করার পর অনুশোচনায় নিজেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলকোটের কামারপাড়া শুকপুকুর এলাকায়। মৃতের নাম বিদেশী দাস (৭৮)। অভিযুক্ত ছোট ছেলের নাম প্রশান্ত দাস। মৃতের বড় ছেলে সুশান্ত দাস জানিয়েছেন, ক্ষেতমজুর পরিবার বিদেশী দাসের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। বড় ছেলে সুশান্ত দাস দেড় কাঠা জমির ওপর থাকা পুরনো বাড়ির পাশেই তিনি নিজে ঘর করে নিয়েছে। সম্প্রতি বিদেশীবাবু রাজ্য সরকারের বাংলা আবাস যোজনায় ঘর তৈরী করেন। বড় ছেলে নিজে বাড়ি করে নেবার পর থেকেই ছোটছেলে বাবাকে পুরনো বাড়ির জায়গা লিখে দিতে চাপ দিতে থাকে। বিদেশীবাবু তাকে জানিয়ে দেন, তিনি জীবিতকালে বাড়ি লিখে দেবেন না। তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ছেলের নামেই করে দিতে চেয়েছিলেন বিদেশীবাবু। কিন্তু বাবার এই বক্তব্য মানতে পারেনি প্রশান্ত। তার দাবী ছিল তার নামে এখনই বাড়ি লিখে দিতে হবে। প্রশান্ত ক্ষেতমজুররের কাজ করে। সুশান্ত দাস জানিয়েছেন, এই বাড়ি লিখিয়ে দেওয়াকে ঘিরেই অশান্তি শুরু হয়। প্রায়শই প্রশান্ত বাবার সঙ্গে এব্যাপারে ঝগড়াও করত। আর এর জেরেই গত বুধবার প্রশান্ত বাঁশ, দিয়ে বেধড়ক মারধোর করে বাবাকে। তার হাত ও কোমড় ভেঙ্গে যায়। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে মঙ্গলকোটের নতুনহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে শুক্রবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসা হয়। সোমবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে বিদেশীবাবু পুলিশকে ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এই ঘটনার বিষয়ে বয়ান দিয়ে যান। তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ একটি কেস শুরু করেছে। অন্যদিকে, মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার পরই প্রশান্ত বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যায় পাশের গ্রামে। বাবাকে রাগের মাথায় পিটিয়ে মারার পর অনুশোচনায় সে সেখানে বিষ খেয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করে বলে জানা গেছে।