বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের মুখেই আবার নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমান শহরের এক নাবালিকা মৃত্যুর পুরোনো মামলা নিয়ে। ২০২২ সালের ২ মার্চ বর্ধমান পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার দিন ওই নাবালিকার বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে ওই এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের সদ্য বিজয়ী কাউন্সিলার ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই নাবালিকার বাড়ির সামনের দেওয়ালেই তাঁদের তিন বোনের গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত ছবি আঁকানো হয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এক্ষেত্রেও অভিযোগ ওঠে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ২ মার্চ দুপুর ৩টে নাগাদ নাবালিকার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় তার শোবার ঘর থেকে। অভিযোগ ওঠে লাগাতার অত্যাচার ও হুমকির জেরেই সে আত্মঘাতী হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা শহর জু়ড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাজ্য রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়ে। পুলিশ তদন্তে নামে, মোট ১৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। যদিও পুলিশ ওই কাউন্সিলারকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আগাম জামিন পান কাউন্সিলার। এদিকে, এই ঘটনায় পক্সো আইনে মামলা চলতে থাকে। কিন্তু এখনও বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এরপরই আদালত এই কেসে সরকারি আইনজীবীকে সরিয়ে দিয়ে আলিপুর সেশন কোর্টের সরকারি আইনজীবী স্বপন কুমার পাঠককে স্পেশাল পিপি হিসাবে এই কেসে নিযুক্ত করে। শনিবার এই কেসেরই তদন্তে ওই নাবালিকার বাড়িতে এলেন স্বপন কুমার পাঠক এবং তাঁর সহকারী। এদিন স্বপনবাবু জানিয়েছেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। বিচারক দ্রুত এই কেসের সমাধান করতে চাইছেন। তাই তাঁকে নিয়োজিত করা হয়েছে। ওই নাবালিকার মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তার পাশাপাশি তিনি নিজে সরজমিনে গোটা বিষয়টি জানতে চাইছেন। তাই এদিন ওই নাবালিকার পরিবারের লোকজন-সহ এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বললেন। এতে তাঁর পক্ষে সওয়াল করতে সুবিধা হবে। এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের মুখে ওই নাবালিকার মৃত্যু রহস্য নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় গতি আনার ঘটনায় অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। বিরোধীরাও এটাকে অস্ত্র হিসাবে নিয়ে ভোটের ময়দানে ঝাঁপাবার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।