ক্ষমতা থাকলে ডিভিসি থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া বন্ধ করুন – দিলীপ ঘোষ
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে কার্যত মুখ বন্ধ করেছিলেন দীর্ঘদিন। ফের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় দেখা দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে বর্ধমানের টাউন হলে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে ফের চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলকে। এদিন তিনি বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা অফিসে সেবা পক্ষকাল উপলক্ষ্যে রক্তদান শিবিরেও অংশ নেন। টাউন হলে এদিন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি ফেরা প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, জামিন তো পেতেই পারেন যে কেউ। এর আগে সুদীপ ব্যানার্জিরাও জামিন পেয়ে গেছেন। বিচার চলে লম্বা হয় আমরা সবাই জানি। তথ্য এলে তখন যথাসময়ে তার সাজা হবে। এটা তো সবাই জানে কী রকম দুর্নীতি হয়েছে। সম্পত্তি তো সব বেড়িয়ে গেছে। এবার তথ্য প্রমাণ, বিচার সময় সাপেক্ষ। আমরা অপেক্ষা করবো একটু। তিনি বলেন, বাড়ি ফিরেছে এবার পার্টিসার্টি হবে, বহুদিন পর ছাড়া পেয়েছে। বীরভূম থেকে ইনকাম কমে গেছে, পার্টির আবার মালকরি আসবে, তার প্রস্তুতি কতদূর কী হল, চেন ঠিক আছে কিনা, কাজল শেখ কি সব খেয়ে নিল না কিছু আছে সব দেখা হবে। উল্লেখ্য, এদিন সকালেই কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরেন অনুব্রত। বর্ধমানের তালিত রেলগেটে তাঁর গাড়ি আটকে যায়। সেই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, কোর্টকে আমি সম্মান করি, কোনো বিতর্কিত মন্তব্য করবো না। দিদির জন্য আমি সব সময় আছি। শরীর ভালো থাকলে দিদির সাথে দেখা করব। উল্লেখ্য, এদিন অনুব্রত মণ্ডল আউশগ্রামে পা রাখতেই কখনও দলীয় কর্মীদের চোখে জল আবার কখনও খোদ অনুব্রতের চোখের জল বাঁধ মানেনি। দফায় দফায় পুষ্পবৃষ্টি চলে। এদিন বন্যা নিয়ে মমতা ব্যানার্জি বারবার ডিভিসিকে-কেন্দ্রকে দোষারোপ করা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা ব্যানার্জি ১৩ বছরে কী করেছেন বন্যা কমানোর জন্য। বৃষ্টি কমে গেছে ওনার কপাল ভালো। ত্রাণের টাকার জন্য ডিমান্ড করবেন এত হাজার কোটি, ততো হাজার কোটি, সেটা ইলেকশন ফান্ড বানাবেন। টাকা লোটার জন্য উনি যান। হেলিকপ্টারে ঘুরে উনি বুঝে যান কত বাড়ি ভেঙ্গেছে, তার খবর দেন। উনি ১৩ বছর কী করেছেন এসবই তো। এটা কতদিন চলবে, একই ডায়লগ, একই ছবি কতদিন দেখতে হবে। উনি একবার বলবেন আমাদের টাকা চাইনা সাড়ে বারোশো কোটি টাকা খরচা করব। ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পর উনি বলছেন আমরা একটা প্ল্যান বানাবো, এতদিন আপনি কি করছেন? একটা তো কিছু করুন। একটা রাস্তা ঠিক করতে পারেনা, লুট করে সব খেয়ে নিচ্ছে। জমিও খেয়ে নিচ্ছে, কতদিন এরকম মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলবে? আর আর জি করের মত একটা কিছু দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কিছু তাঁবেদার অফিসার আছে ঝাঁপিয়ে পড়ে দিদিকে বাঁচাও, দিদিকে বাঁচাও। আর উনি তো বলছেন আমি তো তোমাদের বাঁচাবো, এখন সামলাও। এইভাবে চলছে গোঁজামিল দিয়ে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, সেলিমবাবুরা ৩৪ বছরে কী করলেন? কেন মানুষকে জল থেকে তুললেন না? ওই ঘাটাল সিট জিততো ওরা, আরামবাগ ৭ লাখ ভোটে জিততো। ওই পুরো এলাকা, এখানে উদয়নারায়ণপুর, এই যে তিনটি জেলার সংযোগস্থল হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর সেখানে লক্ষ লক্ষ লোক এফেক্টেড, প্রত্যেক বছর সর্বস্বান্ত হয়। কী অপরাধ করেছে ওখানকার লোক? তাঁরা ট্যাক্স দেয়না? কেন একটা ওখানে ড্রেন হচ্ছে না? খাল হচ্ছে না? কেন বাঁধ ঠিক হচ্ছে না? ঝাড়খন্ডে লোকের সঙ্গে ঝগড়া করে রাস্তা বন্ধ করেছেন, গাড়ি বন্ধ করেছেন, কী অধিকার আছে? এটা কি বাংলাদেশ হয়ে গেছে নাকি? পারমিশন নিতে হবে। আর আমার প্রতিনিধিদের তুলে নিলাম, আপনি তুলে নিলেন ডিভিসির থেকে। আপনি পারবেন ডিভিসি যে বিদ্যুৎ দিচ্ছে পশ্চিম বাংলাকে সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট, বন্ধ করে দিন, অন্ধকার হয়ে যাবে আপনার ভবিষ্যৎ। ওরা দুজন প্রতিনিধি তারা কী করতেন ডিভিসির ওই কমিটিতে থেকে। তাঁরা এতদিন কি করেছে? তাঁরা সরকারকে জানায় না? এখন নাটক করে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা এখনো ওপিডিতে যোগ না দেওয়া সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, আরজিকরের যে ঘটনা তার কী পরিবর্তন হলো? তার কজন দোষী সাজা পেয়েছে? যাদের পদত্যাগ চেয়েছেন ওনারা, তাঁরা প্রমোশন পেয়েছেন, পেছন থেকে এই আন্দোলনকে যারা চালাচ্ছে তাঁরা মমতা ব্যানার্জিকে বাঁচানোর জন্য এসব নাটক করছেন না তো? রাত জাগো, চলো রাতের বেলা একটু বাতি জ্বালিয়ে ছবি তুলে চলে আসি, এইজন্য কি দেড় মাস ধরে বাংলার মানুষ কষ্ট পেল? সরকারের কি কোনো দোষ নেই? স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদত্যাগ হবে না? মমতা ব্যানার্জি পুলিশ মন্ত্রী তার কোন সাজা হবে না? রেজাল্ট চাই এবং এর পরিবর্তন চাই।