বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ছাত্রছাত্রীদের বেত দিয়ে মারধোর করা এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হল বর্ধমান শহরের ইছলাবাদ হাইস্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার হাওলাদার এবং বিনয়ক বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করল দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা। নজীরবিহীন এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাপান উতোরও সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় অভিভাবকদের একাংশ দায়ী করেছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বর্তমান শিক্ষা আইন অনুসারে ছাত্রছাত্রীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন যেখানে নিষিদ্ধ ও অপরাধযোগ্য বলা হয়েছে সেখানে কেন দিনের পর দিন প্রধান শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের বেত দিয়ে মারধোর করবেন – তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণের জন্যই শিক্ষক সুলভ শাসন তিনি করেছেন। মঙ্গলবার স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ আরও একজন শিক্ষক কারণে অকারণে তাদের মারধোর করছে। অভিজিত দে, রিয়া দাস, আকাশদ্বীপ দাস প্রমুখরা জানিয়েছে, কেন তাদের অকারণে মারধোর করা হচ্ছে তা জানতে চাইলে উল্টে আরও মারধোর করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না ছাত্রছাত্রীরাও। গত কিছুদিন ধরেই লাগাতার এই ঘটনা ঘটতে থাকায় মঙ্গলবার স্কুলের পরিচালন কমিটির সভা ডাকা হয়। সেই সভায় ডাকা হয় ছাত্রছাত্রীদেরও। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, সেই সময় তারা কিছু বলতে গেলে তাদের ধমক দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি মিটিং শেষ হবার পর বহিরাগত কয়েকজন স্কুলের গেটে তাদের মারধোর করে। এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা যখন স্কুলের গেট থেকে বের হয় সেই সময় একাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের মানুষজন ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আর তারপরেই দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা বর্ধমান থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অন্যদিকে, পাল্টা একাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরাও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অন্যদিকে, স্কুলের পরিচালন সমিতির আমন্ত্রিত সদস্য তথা এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার পরেশ সরকার জানিয়েছেন, স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের কথা শুনবে না বা স্কুলে অশান্তি সৃষ্টি করবে এটাও যেমন কাম্য নয়, তেমনি স্কুলের শিক্ষকদেরও আরও যত্ন ও স্নেহশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এদিন এই ঘটনা সম্পর্কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার হাওলাদার জানিয়েছেন, স্কুলের আভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা হয়েছিল। তাঁরা বসে আলোচনা করে মিটিয়ে নিয়েছেন। দুদল ছাত্র স্কুলের বাইরে মারপিট করেছে বলে শোনার পর তাদের বোঝানো হয়েছে।